ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানুর ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে রাখার দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানুর ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে রাখার দাবি স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মুক্তিযোদ্ধা কামাল লোহানী। ছবি: বাংলানিউজ

পাবনা: পুরুষ বেশে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নারী মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিলের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠেছে।

সোমবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তারা এ দাবি জানান। পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাসিসট্যান্স ফর রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ন্যাক (আর্ক) নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

 

শিরিন বানু মিতিলের মামাতো ভাই আইনজীবী তসলিম হাসানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযোদ্ধা কামাল লোহানী, পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি শিবজিত নাগ, কলাম লেখক রণেশ মৈত্র, পাবনা জেলা জাসদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও মাছরাঙা টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান উৎপল মির্জা।  

এ নারী মুক্তিযোদ্ধার অপ্রকাশিত স্মরক গ্রন্থ পড়ে শোনান মিতিল স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক শামসুন্নাহার।  

স্মরণ সভায় কামাল লোহানী বলেন, মিতিল সাহসী মায়ের বীর সন্তান। তিনি নারী হয়ে পুরুষের বেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এটা দেশের জন্য গৌরবের। এই ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত। তার প্রথম মৃত্যুবাষির্কীতে আমাদের দাবি, শিরিন বানু মিতিলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠপুস্তকে তোলা হোক। আমাদের পাঠ্য বইতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। সরকার ইচ্ছা করলেই এ উদ্যোগটি নিতে পারে। এছাড়া মিতিলের ইতিহাস তুলে ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ হতে পারে।  

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, শিরিন বানু মিতিল পাবনার মেয়ে। কিন্তু তিনি এ দেশের গৌরব, অহংকার। তিনি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ছিলেন। দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।  

তিনি জানান, পাবনা জেলা পরিষদের এই বছরের যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ, রাস্তা-ভবন যাই হোক, শিরিন বানুর নাম ব্যবহার করা গেলে সেটা করা হবে। মানুষ যেন তাকে স্মরণ করে এমন একটি স্থান তার নামে দেওয়া হবে।  

শিরিন বানু মিতিল ১৯৫০ সালের ২ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তা মা সেলিনা বানু ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী। বাবা শাহজাহান মোহাম্মদ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন।  

মুক্তিযুদ্ধের সময় শিরিন বানু মিতিল পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে বাংলা বিভাগে প্রথম বর্ষে পড়তেন। ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানি হানাদারদের আক্রমণ শুরু হলে ২৮ মার্চ পাবনা টেলিফোন এক্সচেঞ্জে তুমুল যুদ্ধ হয়। শিরিন বানু মিতিল পুরুষ বেশে একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সে যুদ্ধে অংশ নেন।  

২০ এপ্রিল তিনি ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে যান। বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত নারীদের একমাত্র প্রশিক্ষণ শিবির ‘গোবরা ক্যাম্পে’ যোগদান করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ২০১৬ সালের ২১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন শিরিন বানু মিতিল।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এসকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।