ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টানা বর্ষণে রাস্তায় খানা-খন্দ, দুর্ভোগে সিরাজগঞ্জবাসী

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
টানা বর্ষণে রাস্তায় খানা-খন্দ, দুর্ভোগে সিরাজগঞ্জবাসী সিরাজগঞ্জে টানা বর্ষণে রাস্তায় তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানা-খন্দ। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: ‘দুই সপ্তাহ আগে রিকশায় নতুন এক্সেল লাগাইছি। কাইল বিক্যালেই রাস্তার গর্তে পইড়্যা ভাইঙ্গা গেছে। আবারও নতুন এক্সেল লাগাইয়্যা আইজক্যাও রাস্তায় বারাইছি। খুউব ভয়ে ভয়েই গাড়ী চালাইত্যাছি।’

সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার রেলগেট চার রাস্তার মোড়ে যাত্রীসহ রিকশা টানতে টানতে এসব কথা বলছিলেন চালক ছামিনুল।

তার কথা, ‘এমনিতে শহরের ব্যাবাক রাস্তাঘাট ভাঙ্গা, তার ওপর বৃষ্টিতে কাদা আর পানি মাড়িয়ে রিকশা চালানো খুবই কষ্টকর।

তারপরও পেটের জন্য কাজ করতেই হবে। ’

সদর উপজেলার শিয়ালকোল থেকে কাঠের গুড়ি বোঝাই ভ্যান নিয়ে শহরে আসছিলেন চালক শফিকুল। শহরের নিউ মার্কেট মোড়ে এসেই তিনি থেমে গেলেন। পুরো রাস্তাজুড়ে খানা-খন্দ, আর সঙ্গে রয়েছে বৃষ্টির পানি আর কাদা। কিভাবে এই সড়ক পাড়ি দেবেন, বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে সেটাই ভাবছিলেন তিনি। এ সময় দু’জন রিকশাচালকের সহায়তায় রাস্তা হলেও মৌসুমী হল মোড়ে এসে আবারও বিপাকে পড়লেন।

সেখানে কথা হয় শফিকুলসহ আরও বেশ ক’জন রিকশাচালকের সঙ্গে। তারা বলেন, শহরের প্রায় সবসড়কই খানা-খন্দে ভরা। বিশেষ করে নিউ মার্কেট মোড়, মৌসুমী হল মোড়, বাজার স্টেশন, স্বাধীনতা স্কয়ার চত্বর, রেইলগেট চৌরাস্তা, নবদ্বীপ পুল থেকে ধানবান্ধি সড়ক, বাজার স্টেশন-মাহমুদপুর সড়ক একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তায় অজস্র খানা-খন্দক আর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সিরাজগঞ্জে টানা বর্ষণে রাস্তায় তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানা-খন্দ।  ছবি: বাংলানিউজটানা দু’দিনের বর্ষণে রাস্তার পাশ দিয়ে কাদা আর বড় গর্তগুলোতে পানি জমে থাকায় যানবাহন চালানোই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই রিকশা, অটোরিকশাসহ অনেক যানবাহন বিকল হয়ে পড়ছে এসব রাস্তায়।

শহরের ইসলাম ইলেকক্ট্রিকের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় হেঁটে চলাই দায়। বৃষ্টির দিনে কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলো। আর রিকশায় উঠলে তো কোমর ব্যথা হয়ে যায়।

মৌসুমী সিনেমা হলের মালিক বাছেদুর রহমান বাচ্চু বলেন, পুরো শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা এতই খারাপ যে, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়।

জেলা বাসদের আহবায়ক নব কুমার কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও সিরাজগঞ্জের রাস্তাঘাট দেখে তা বোঝার উপায় নেই। এসব বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা অচিরেই কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক ডা. জহুরুল হক রাজা জানান,  এলাকায় একে তো রাস্তার দুরবস্থা, তার ওপর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো নেই। এসব কারণে নাগরিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে রোগী নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করাই দায়।

রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুরবস্থার কথা স্বীকার করে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা বাংলানিউজকে বলেন, ১৬ মাস ধরে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। এরই মধ্য জুবিলী বাগান রোড, বাহিরগোলা সেতু ও মাছুমপুর সড়কের কাজ করা হয়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক, মেছুয়া বাজার সংস্কার, বাস টার্মিনাল নির্মাণ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ৪২ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। এরইমধ্যে প্রকল্প পরিচালকও নিয়োগ হয়েছে। আশা করছি বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলে এসব কাজ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।