ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘জেলা প্রশাসকদের জন্য এটি লেসন হতে পারে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
‘জেলা প্রশাসকদের জন্য এটি লেসন হতে পারে’

ঢাকা: ‌আমন্ত্রণপত্রে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার নিয়ে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমন ইস্যুতে বরিশাল ও বরগুনা জেলা প্রশাসককে (ডিসি) প্রত্যাহার করে নিয়েছে সরকার।  

দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদেরকে প্রত্যার করে নেওয়ার পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, এ ধরনের বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের প্রত্যুৎপন্নমতিতা দেখানো দরকার।
 
বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে আগৈলঝাড়ার তৎকালীন ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় সোমবার (২৪ জুলাই) দায়িত্ব অবহেলার জন্য বরিশালের ডিসি ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান এবং বরগুনার ডিসি মহা. বশিরুল আলমকে প্রত্যাহার করে সরকার।

দায়িত্ব অবহেলায় বরগুনা ও বরিশালের ডিসি প্রত্যাহার
 
পাবনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানকে বরগুনার ডিসি করা হয়েছে। আর বরিশালের নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) হাবিবুর রহমান।
 
দুই ডিসিকে প্রত্যাহার নিয়ে সচিবালয়ে নিজ দফতরে জনপ্রশামন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, জেলা প্রশাসকের পদায়ন বা প্রত্যাহারের কারণ বিবেচনা করলে বলা যায়, এটা স্বাভাবিক। বদলির জন্যই চাকরি।
 
‘কিন্তু এক্ষেত্রে একটু বলার আছে, আমাদের তারিক সালমন, বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। তার ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছিল আদালতে। সেই মামলায় জামিনযোগ্য একটি ধারায় জামিন হয়নি, এরকম একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল এবং পরবর্তীতে জামিন হয়েছে। ’
 
এটা নিয়ে জনমনে একটা বিভ্রান্তি হয়েছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘ইউএনও’র বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি অভিযোগ আনার মতো কোনো ঘটনা ছিল না। এটাকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছ। সেই কারণে আদালতও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আদালত নিশ্চয় সুবিবেচনা দিয়ে বুঝেছেন যে, এই মামলায় তাকে অভিযুক্ত করার তেমন কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। সে কারণে মামলার বাদী মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
 
পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি দাওয়াত কার্ডে ব্যবহারের জন্য ইউএনওকে হেনস্থা করার প্রতিবাদ করায় গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান সিনিয়র সচিব।
 
‘এখানে আমি বলতে চাই, এ রকম একটি ঘটনায় সারা দেশের মানুষ বিশেষ করে মিডিয়ার প্রতিনিধিদের আমি খুবই ধন্যবাদ দেবো এই কারণে যে, তাদের যে প্রতিবাদ এবং এই বিষয়টাকে তারা যেভাবে তুলে এনেছেন এবং এ ব্যাপারে মানুষের সহানুভূতি যেভাবে তৈরি হয়েছে সেই কারণেই হয়তোবা বাদী উদ্বুদ্ধ হয়েছেন, মামলাটি এতো তাড়াতাড়ি প্রত্যাহারের ব্যাপারে। ’
 
‘পরবর্তীতে প্রশ্ন উঠলো যে, যে কারণে মামলা করা হয়েছে, এরকম কাজ, এটা খুবই ভালো কাজ ছিল। অথচ নেতিবাচকভাবে সেটার উপস্থাপন হয়েছে। তো সেই লোকটির এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার। ’
 
দুই ডিসির বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, যারা তার (তারিক সালমন) সিনিয়র ছিলেন, জেলা প্রশাসক দুই জন, তাদের তাকে যেভাবে গাইড করার কথা ছিল এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে যেভাবে বিষয়টি অবহিত রাখা উচিত ছিল, সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক হিসেবে গুরু দায়িত্ব পালনে তারা আমার মনে হয় অবহেলা অথবা ব্যর্থ হয়েছেন।
 
‘সেই কারণে মনে করি যে, এটি অন্যান্য জেলা প্রশাসকদের একটু স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে, এ ধরনের কাজে আরো বেশি প্রত্যুৎপন্নমতিতা দেখানো দরকার। এবং যথাসময়ে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা দরকার। এটি একটা লিসন হতে পারে অন্যান্য জেলা প্রশাসকদের জন্য। ’
 
দুই ডিসিকে প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের তরফ থেকে আমরা মনে করি, এরকম একটা পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্যই নতুন করে দু’জন জেলা প্রশাসককে পদায়ন করেছি। যাদেরকে পদায়ন করা হয়েছে তারা জেলা প্রশাসকদের ফিটলিস্টে ছিলেন। তারা যোগ্য কর্মকর্তা, আশা করছি তারা সেখানে দায়িত্বশীল আচরণ করবেন এবং জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব কর্তব্য পালনে সফলতার পরিচয় দেবেন।
 
প্রত্যাহার হওয়া দুই ডিসি মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ডিসি সম্মেলনে যোগ দেবেন কিনা- জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, কেবিনেট তাদের আহ্বান জানিয়েছে। আদেশ হয়ে গেলে তারা আসবেন কিনা- এটা তাদের বিষয়। এ সিদ্ধান্ত কেবিনেট নেবে।
 
‘জেলা প্রশাসক আমার তো মনে হয় নাও আসতে পারেন, ভারপ্রাপ্ত একজন যোগদান করতে পারেন। ব্যক্তি কোনো বিষয় নয়, প্রতিনিধিত্ব করা দরকার। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।