ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এই দুর্ভোগের শেষ কবে?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
এই দুর্ভোগের শেষ কবে? আনোয়ার হোসেন রানা-ছবি: ব‍াংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সড়ক ও পানি নিষ্কাশন ড্রেন সংস্কার এবং বিভিন্ন উন্নয়নকাজের জন্য রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় চলছে অবিরাম খোঁড়াখুঁড়ি। বছরব্যাপী এই খোঁড়াখুঁড়ির চলমান ভোগান্তিতে বাড়তি আপদ হিসেবে যোগ হয়েছে  অবিরাম বর্ষণ। আবার সুয়ারেজ লাইনের চলমান কাজে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এসব এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে হাঁটু পানি জমে যায়।সব মিলিয়ে গোটা রাজধানী শহরটাই হয়ে উঠেছে যেন এক ভোগান্তির বৃহৎ কারখানা।  

খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পায়ে পায়ে কাদার ছড়াছড়ি, আর রোদ হলে ধুলোর ঝড়ে চারদিক অন্ধকার। চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এই কাদা আর ধুলোর অত্যাচার সয়েই গন্তব্যের দিকে ছুটতে হয় রাজধানীর রামপুরা-মালিবাগ-মৌচাক ও এর আশপাশের বাসিন্দাদের।

বর্ষা মৌসুমে রামপুরা থেকে মৌচাক সড়কে এমন নরকযন্ত্রণার চিত্র এখন নিত্যদিনের। ভুক্তভোগী এলাকবাসীর এখন একটাই প্রশ্ন: ‘সংস্কারের খোঁড়াখুঁড়ি অনেক তো হলো, কিন্তু এই দুর্ভোগের শেষ কবে?

শনিবার (২২ জুলাই) মৌচাক ও মালিবাগ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কে ছোট বড় খানাখন্দ আর কাদায় ছোট যানবাহন আর মানুষ চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের কাজ চলতে থাকায় বিকল্প সড়ক হিসেবে আবুল হোটেলের সামনে থেকে আমতলী দুই নম্বর সড়কে প্রবেশ করে ভারী ও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো।
আনোয়ার হোসেন রানা-ছবি: ব‍াংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমএদিকে এই সড়কের প্রবেশমুখেই সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। স্কুলটির নিজস্ব কোনো পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার উপরেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে শিক্ষার্থীদের ওঠা-নামা করানো হয় বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুর রহমান। এতে স্কুল কার্যক্রম শুরু হলে সড়কে সীমাহীন যানজট লেগে থাকে বলেও জানান ওই ব্যবসায়ী।

পেলিও জুস অ্যান্ড কফি বারের মালিক রাজিব (৩৫) বাংলানিউজকে বলেন, বছর ধরেই এ সড়কের এমন করুণ দশা। তবে গত তিন মাস ধরে খুবই খারাপ অবস্থা। বৃষ্টি হলে আমার দোকানের সামনের রাস্তায় ১ ফুটের মতো পানি জমে যায়। যখন একেবারেই কোনো গাড়ি চলতে পারে না, তখন গর্তগুলোতে ইট ফেলে যায়। কিন্তু তিন-চার দিনের মধ্যে আবারো গর্ত হয়ে যায়। এসব গর্তের কারণে এখানে ছোট ছোট দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।

এভাবে ধূলা আর পানির কারণে অধিকাংশ সময় দোকান বন্ধ রাখতে হয় বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ইফতি বাংলনিউজকে বলে, এই রাস্তায় রোদ-বৃষ্টি সব সময়ই দুর্ভোগ। বৃষ্টি হলে পানির কারণে রাস্তার গর্তগুলো দেখা যায় না। গত সপ্তাহে আমার বন্ধু স্কুলে আসার সময় গর্তে পড়ে যায়। ওর পুরো শরীর কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। পরে ওর আম্মু বাসা থেকে অন্য একটি ড্রেস এনে দেন। আনোয়ার হোসেন রানা-ছবি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমখোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যানজট নিরসনে মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ ও রামপুরা এলাকায় ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ। ২০১৫ সালের মধ্যে এই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বারবার নকশা পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় কাজ এগিয়ে নিতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় এক সরকারি চাকরিজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা বিপদে আছি এটা বলাও মহাবিপদ। কি বলতে কি বলে ফেলবো পরে আবার আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই কাজ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালে। তখন থেকেই আমরা বিপদের মধ্যে আছি। এখন বলা হচ্ছে, আগামী ঈদের আগে কাজ শেষ হবে, কিন্তু যে কাজ বাকি আছে তা আগামী ১ বছরেও শেষ হবে বলে মনে হয় না।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল এবং ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
এসআইজে/এসএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।