ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নির্যাতিতা স্ত্রীকে হুমকি পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
নির্যাতিতা স্ত্রীকে হুমকি পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর গৃহবধূ ফাতেমা বেগম শিলা

নড়াইল: ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ ফাতেমা বেগম শিলাকে পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েও ক্ষান্ত হননি পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী সৈয়দ আল মামুন। এখন হাসপাতাল থেকে তাড়াতে স্ত্রী ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের প্রভাবে ও হুমকিতে থানায় নির্যাতনের ঘটনায় মামলা পর্যন্ত করতে পারেননি নির্যাতিতা শিলা।

মামুন নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার কুন্দশী এলাকার সৈয়দ সিরাজ আলীর ছেলে ও খুলনা আদালতের ইন্সপেক্টর।

গত শুক্রবার (২১ জুলাই) রাতে শিলাকে মারধর করে ঘরের ভেতরে আটকে রাখেন পুলিশ কর্মকর্তা মামুন। খবর পেয়ে শিলার বাবার বাড়ির লোকজন এসে শনিবার (২২ জুলাই) সকাল দশটার দিকে তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে মামুন শিলাকে হাসপাতাল থেকে তাড়িয়ে দিতে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ শিলার পরিবারের।

ফাতেমা বেগম শিলা বাংলানিউজকে জানান, সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিয়ের এক বছর পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি অনেকবার বাবার বাড়ি টাকা এনে দিয়েছেন। তারপরও মামুন ক্ষান্ত হননি। সম্প্রতি পদোন্নতির কথা বলে তার বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন মামুন। কিন্তু বাবা ওই টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন।

এ ঘটনায় শিলার পরিবার শনিবার বিকেল থেকে এ পর্যন্ত চেষ্টা করেও লোহাগড়া থানায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা করতে পারেননি। এমনকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম শিলাকে নির্যাতনের ব্যাপারে কথা বলতেও রাজি হননি।

লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শেখ আবুল হাসনাত বাংলানিউজকে জানান, শিলার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার শরীরের ব্যথা আরও বাড়তে পারে।


শিলার বাবা মান্নান শরীফ অভিযোগ করেন, মেয়েকে সুখী রাখতে জামাতা মামুনের সব ধরনের দাবি মিটিয়েছেন তিনি। তবুও মামুন তার মেয়েকে নির্যাতন করছেন। এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানায় মামলা করতে চাইলে মামলা নেয়নি পুলিশ।

রোববার (২৩ জুলাই) লোহাগড়া থানায় বসে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিক, যা পারেন লেখেন’। কোনো মন্তব্য করবেন না বলেও জানান তিনি।

এ সময় তিনি থানার মধ্যেই স্থানীয় দু’জন ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আলোচনা করছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
টিএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।