ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ‘সঠিক গাইডলাইন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ‘সঠিক গাইডলাইন’ ছবি: পিআইডির সৌজন্যে

ঢাকা: ভালো ফলাফলের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যোগ্যতাসম্পন্ন, আর্দশ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সঠিক গাইডলাইন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও ফলের পরিসংখ্যান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি সংশ্লিষ্টদের এ পরামর্শ দেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাবা-মা, অভিভাবক, শিক্ষকদের বলবো ছেলে-মেয়েদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইন দেওয়া।

তাদের সমস্যাগুলো জানা ও এর সমাধান করা। ’

তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের আরও বেশি সময় দেওয়া। তাদের সঙ্গে আন্তরিক ভাবে মেশা। যাতে বন্ধুর মতো তারা বাবা-মাকে সব বলতে পারে। সেই রকম একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা।  ছেলে-মেয়েরা যেন মন খুলে সব বলে সেই আস্থা ও বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে। ’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাস করার জন্য, ভালো ফলাফল করার জন্য প্রত্যেকটা ছেলে-মেয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকতে হবে। ভালোভাবে পড়তে হবে। পড়াশোনায় মন দিতে হবে।  প্রতিদিনের কোন সময়টা ভালো; সেটা পড়াশোনার জন্য বেছে নিতে হবে। ’

যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে এদেশের নেতৃত্ব তোমাদেরই দিতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘তোমাদের ভালো বিজ্ঞানী হতে হবে, ভালো শিক্ষক হতে হবে। উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। এ রকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই তো এখনকার প্রজন্মই সামনে আসবে। নিজেদের সেভাবে তৈরি করতে হবে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পিতা-মাতার প্রতি তাদের দায়-দায়িত্ব পালন করবে সেই সঙ্গে দেশের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্যও পালন করবে। ’

বাংলাদেশকে বিশ্বে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

**কুমিল্লার এই দুরবস্থা কেন?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনোভাবেই ছেলে-মেয়েরা যাতে মাদকাসক্তি, জঙ্গিবাদসহ এ ধরনের পথে না যায়।  ছেলেমেয়েরা কার সঙ্গে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকছে কি না। এ বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া। ’

‘রেজাল্ট যথেষ্ট ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায় আগ্রহ বেড়েছে। ’

শিক্ষা বৃত্তি, অবকাঠামো ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

এবারের ফলাফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের যখন পরীক্ষার রেজাল্ট হয়, কত পাস হলো, কি হলো, পত্র-পত্রিকা নানা রকম লিখতে থাকে। ’

অন্যান্য সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করে এবং সবাইকে তা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে শেথ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করার আগে কত পাস করতো, ধীরে ধীরে তা কত বৃদ্ধি পেয়েছে।  এক সময় ৩০ শতাংশ, ৪০ শতাংশ ছেলে-মেয়ে পাস করতো। আজকে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করছে, আরও বেশি মনোযোগী হয়েছে। ’ 

এ বছর ফলাফলে কিছুটা খারাপ করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার রেজাল্ট, পাস কিছু কম হতে পারে। যেহেতু পড়াশোনার মানের প্রতি আরও বেশি দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষা পদ্ধতি আরও আধুনিক করা হয়েছে। তাছাড়া খাতা দেখা থেকে শুরু করে সব জায়গা ভালোভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। ’

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কৃতকার্যদের অভিনন্দন জানান।

যারা পাস করতে পারেনি তাদের মন দিয়ে পড়াশোনা করে আগামীর জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা পাস করতে পারেনি তাদের উৎসাহ দিতে হবে। তাদের নিজেদেরও আরও উৎসাহী হতে হবে। পড়ালেখার প্রতি আরও মনোনিবেশ করতে হবে, তাদের আরও ভালো করতে হবে। ’

অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সমন্বিত ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের, শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।