ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে সেই বাদীর বিরুদ্ধে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে সেই বাদীর বিরুদ্ধে!

বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে বরগুনা সদর উপজেলায় কর্মরত) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজুর মামলা দায়েরের পেছনে নিজেকে জাহির করা ছাড়া অন্য কোন কারণ দেখছে না সুশীল সমাজ।

কারণ শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবিতে কেউই কোন ধরনের বিকৃতির আলামত খুঁজে পাননি। জেলা আওয়ামী লীগও এর দায়ভার নিতে রাজি নয়।

 

বরং শিশু বয়সে মানুষের অবয়ব দিয়ে ছবি আঁকতে পারায় শিশুর মেধা ও গুণের প্রশংসা যেমন ছড়িয়ে পড়ছে, তেমনি ওই শিশুটিকে পুরষ্কৃত করা এবং স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে এই ছবি ছাপানোয় এখন প্রশংসিত গাজী তারিক সালমন।

বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদ সভাপতি অ্যাডভোকেট এসএম ইকবাল বলেন, শিশু ছবি আঁকবে শিশুর মতো করে। শিশুর আঁকা ছবি নিয়ে এতো বিতর্ক, জলঘোলা করার কোন যৌক্তিক কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। বঙ্গবন্ধুকে বিকশিত হতে দেয়া উচিত, শিশুদের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে আরো বেশি করে জনপ্রিয় করা উচিত।

নিজেকে জাহির করার বিষয়ে তিনি বলেন, একটা মানুষ নিজেকে জাহির করতে এমনটা করতে পারে, এটা অসম্ভব কিছু নয়।

এদিকে সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু তার মামলার এজাহার এবং বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি নিজের শ্রদ্ধাবোধের কথা উল্লেখ করে তার (বঙ্গবন্ধুর) ছবি সামনের পাতায় না ছাপিয়ে পেছনের পাতায় ছাপানো ও বঙ্গবন্ধুর বিকৃত ছবি ছাপানোর অভিযোগ এনে জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কারও হয়েছেন।
আর এসব কিছুর পর তার রাজনৈতিক ঘনিষ্টজনরা কেউই তার পক্ষে বা বিপক্ষে এ মুহুর্তে মত দিতেও রাজি হচ্ছেন না।

এর আগে শুক্রবার এই ঘটনাটি নিয়ে সুষ্ঠ পরিসমাপ্তি চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-২(বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ ইউনুস। তবে তিনি এও জানিয়েছিলেন, দলীয় সিদ্ধান্তে ওই মামলাটি দায়ের হয়নি, এটা সাজু সাহেব নিজ থেকে করেছেন।
শনিবার এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বার লাইব্রেরিতে বসে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। এজন্য রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

পাশাপাশি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভেকেট একেএম জাহাঙ্গীর তো এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতেই রাজী হননি।

আর বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও মামলার বাদী আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু জানান, তিনি এখনো সাময়িক বহিষ্কারের কোন কাগজ পাননি, সেটি পেলে তখন বলতে পারবেন কি করা হবে।

বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপানোর বিষয় নিয়ে তারিক সালমনকে জেলা প্রশাসকের নোটিশ প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, যা আমিও সংগ্রহ করেছি। তবে ভবিষ্যতে কি হবে তা বলতে পারি না। আর এটা তো এখন আদালতের বিষয়, তাই কিছু বলাও সম্ভব নয়।

এদিকে মামলার বাদী সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে পূর্ব থেকে চেনেন না জানিয়ে গাজী তারিক সালমন বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিষয়গুলো উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও অ্যাসোসিয়েশন জানে। এখন বলতে পারি, আদালতের দেয়া নির্ধারিত তারিখে হাজির থাকবো।

এ মুহূর্তে তার পক্ষ থেকে বাদীর বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি তার সহকর্মী ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বরিশাল জেলা সভাপতি ও বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানান, ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মামলার পুরো বিষয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করেছেন। এখন তারা কাগজপত্র গুছিয়ে কেন্দ্রে পাঠাবেন। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটিই গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

তবে এর মধ্য দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রম শুরু হলো বলেই ইঙ্গিতও করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
এমএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।