ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমার স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
আমার স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাবি: সকাল কী বিকেল, রবীন্দ্র কলাভবনের সামনে পশ্চিম পাশের দোকানে কেউ যেতেই ছুটে এসে বলবে, ভাই/আপু বসেন, নাস্তা করেন। তার নাম সুমন। বয়স ১২ কিংবা ১৩ বছর। দোকানে পানি ও খাবার পরিবেশন করা তার কাজ।

যে বয়সে তার হাতে থাকার কথা বই-খাতা, দরিদ্রের কারণে সে বয়সে তাকে হাতে নিতে হয়েছে পানির গ্লাস ও খাবারের প্লেট। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তো দূরের কথা, অক্ষরজ্ঞান বা নিজের নামটিও লিখতে জানে না সুমন।

রাজশাহী শহরের নজিরের মোড়ের বাসিন্দা সুমন। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সেই বড়। বাবা শাহাদৎ হোসেন মারা গেছেন আগেই। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। বোনের বিয়ে হয়েছে দেড় বছর আগে। বেশ কিছুদিন ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রবীন্দ্র কলাভবনের সামনে মকসেদ আলীর খাবারের দোকানে কাজ করে সুমন।

উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে সুমন জানায়, পাঁচ বছর বয়সে বাবা মারা যায়। দরিদ্র পরিবারে সবচেয়ে বড় কষ্ট খাবারের। অসহায় অবস্থায় বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দোকানে কাজ শুরু করে সে। সুমন দোকানে কাজ করে পারিশ্রমিক হিসেবে প্রতিদিন পায় মাত্র ৫০ টাকা, কোনো কোনোদিন ৬০ টাকা। সেই সঙ্গে জোটে দুই বেলা খাবার।

সুমন বলে, আমারও ইচ্ছে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হতে, এখানে লেখাপড়া করতে। স্বপ্ন দেখি, এখানে আমার অনেক বন্ধু থাকবে, তাদের সঙ্গে বসে আড্ডা দেবো। একদিন অনেক বড় হবো, একটা ভালো চাকরি করবো। তখন মায়ের আর কোনো দুঃখ থাকবে না।

জানি আমার স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য না। লেখাপড়া করতে হলে বাবা-মায়ের অনেক টাকা থাকতে হয়। আমার বাবা-মায়ের এতো টাকা নেই, তিনবেলা খাবার ও পোশাকের জন্য অন্যের কাজ করি, দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে যায় সুমন।

কথা বলতে বলতেই যাই, অনেক কাজ পড়ে আছে- বলে চলে গেল সে। তার সেই গন্তব্যে, যেখানে স্বপ্ন নেই, সুখও অধরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad