ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভোগান্তিতে ফেলে ফুটপাত-সড়কেই বেচাকেনা!

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
ভোগান্তিতে ফেলে ফুটপাত-সড়কেই বেচাকেনা! এরকম কয়েকশ’ দোকান দখল করেছে রাজধানীর ফুটপাত- বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীজুড়ে চলছে হকারমুক্ত ফুটপাত গড়ার কার্যক্রম। এর মধ্যে কয়েক দফা অভিযানের পর নিউমার্কেট, গাউছিয়া ও গুলিস্তানের কয়েকটি স্থান, গুলশান, বনানীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত হকারমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

সেখানে রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মিরপুর-১০ নম্বরে সড়ক ও পুরো ফুটপাতজুড়ে বসেছে অসংখ্য অবৈধ দোকানপাট। এতে পথচারীদের ভোগান্তির পাশাপাশি ব্যস্ততম এলাকা হওয়ায় তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট।

সরেজমিন দেখা যায়, মিরপুর-১০ নম্বর হয়ে ১, ১২, ১৪ ও কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া যাওয়ার ফুটপাতজুড়ে পোশাক, জুতা, স্যান্ডেল, মোবাইল এক্সেসরিজসহ নানা পণ্যের দোকান নিয়ে বসেছেন হকাররা।

গোল চত্বরের মোড়ের পশ্চিম দিকে ফুটপাতে ফলের দোকানের কারণে হাঁটার জন্য একহাত জায়গাও খালি নেই। চারদিক ঘিরে ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে রমরমা ব্যবসা পাতিয়ে বসেছেন হকাররা। আবার অনেকে ফুটপাতে জায়গা না পেয়ে ভ্যান নিয়ে বা টেবিল পেতে রাস্তায় পণ্য নিয়ে বসেছেন। এতে জনসাধারণে চলাচলে যে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এ বিষয়ে কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এসব দোকানে বেচাকেনা চলে। সকালে বসে কাঁচাবাজার। ১০টার পর থেকে দোকানপাট। ফুটপাতের অর্ধেকের বেশি জায়গা জুড়ে দোকান। হাঁটার জন্য ফুটপাতে যে জায়গাটুকু অবশিষ্ট তাতে হাঁটার কোনো উপায় নেই। যে কারণে পথচারীদের বাধ্য হয়ে মূল সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকির সঙ্গে মূল সড়কে বাড়ছে যানজট।

মিরপুর-১০ আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে পানির ট্যাংকি পর্যন্ত হকারদের দৌরাত্ম্য চোখের পড়ার মতো। এখানে আবাসিক এলাকার ফুটপাত ও সড়কে জমজমাট ব্যবসা করতে দেখা গেলো হকারদের।  

বেনারসি পল্লীর বাসিন্দা তাহমিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন ১০ নম্বরে এ সড়কগুলো দিয়ে আমাদের পথ চলতে হয়। ফুটপাত ছাড়িয়ে সড়কে দোকান বসানোর কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে মূল সড়ক দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।

সেনপাড়ার বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, সকাল-বিকেল এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। তখন সড়কের বেশির ভাগই দখলে চলে যায়। সে সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। তাতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারী হতে শুরু করে এ সড়ক ব্যবহারকারীদের।  

এসব ব্যবসায়ীদের কাছে দোকানের বিষয়ে কোনো অনুমতি আছে কি-না জানতে চাইলে একেজন একেক উত্তর দেন।
 
ইমরুল নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, ফুটপাতে বসা নিষেধ, এটা জানি। এখানে যার তত্ত্বাবধানে কাজ করি হয়তো তিনি ম্যানেজ করতে পারছেন, এ কারণে বসতে পারছি। মোরসালিন নামে এক ব্যক্তি প্রতিদিন সন্ধ্যায় এসে নির্দিষ্ট কিছু টাকা নিয়ে ‍যান। এছাড়া দোকান শুরুর সময় মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে।  

মিরপুর ট্রাফিক পুলিশ রবিউল বলেন, জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে সব জায়গায় ফুটপাতের দোকান উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখনও মিরপুরে ফুটপাত রয়েছে। তবে আগে আরো বেশি দোকান ছিলো, এখন কিছু স্থানে বসতে দেওয়া হয়না। ফুটপাতে বেচাবিক্রি হলে যানজটও হয়। যখন সেখানে যানজট হয়, তখন আমাদের লোকজন গিয়ে অথবা রেকারিং করে সড়ক থেকে ব্যবসায়ীদের উঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরে তারা আবার যে যার মতো দোকান সাজিয়ে বসে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
এমসি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।