ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

উবার টেকাতে চালকের পরামর্শ

মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
উবার টেকাতে চালকের পরামর্শ উবার টেকাতে চালকের পরামর্শ

ঢাকা: শুরুতে যে গাড়ির সংখ্যা ছিল, তা দিন দিন কমে আসছে। কারণ ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকরা অনেকেই সরিয়ে নিচ্ছেন গাড়ি। যাত্রীদের সঙ্গে গাড়ির মালিকদেরও প্রণোদনা না দিলে বাংলাদেশে উবার সার্ভিস টিকতে পারবে না বলে মত চালকের।

শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জনতা হাউজিং থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রার জন্য উবার পেতে বেশ সময়ক্ষেপণ করতে হয়। কাছাকাছি দূরত্বে ৬ থেকে ৭টি গাড়ি দেখা গেলেও চালকের পক্ষ থেকে সাড়া মিলছিল না।

প্রায় ১৫ মিনিট পর একজন চালক সদয় হলেন। এক্স করোলায় এয়ারপোর্ট যেতে আমাকে গুনতে হবে ৫শ ৫৫ টাকা। একসময় সিএনজি অটোরিকশার তুলনায় উবার সস্তা ছিল। এই ভাড়া দেখে বোঝা গেল আর তা নেই। চালক আগারগাঁও রেডিও অফিসের সামনে ছিলেন। তিনি ফোন দিয়ে জানতে চাইলেন, জনতা হাউজিং কোথায়? তাকে বোঝাতে বেশ বেগ পেতে হলো। বললাম, আনার জিপিএসে রোড দেখাচ্ছে না?

উত্তরে বললেন, মেশিনের রাস্তা সবসময় ঠিক হয় না। আপনে আগাইতে থাকেন। আমি উত্তরার দিকেই যেতে চাচ্ছিলাম। তাই আপনাকে নিয়ে যাবো।

তার দয়া!

বাসা থেকে নেমে দুই গলি এগোতেই কাঙ্ক্ষিত উবারের গাড়ির দেখা। চালক মিরপুরের সড়ক না ধরে আগারগাঁও হয়ে কাকলীর রাস্তা ধরলেন। তার এ সিদ্ধান্ত ভালো লাগলো। কারণ মিরপুরের পথে গাড়ির জট বিকেলে আরো ভয়াবহ রূপ নেয়। গাড়ি চলতে চলতে কথা বলা।

উবার চলছে কেমন?
ভালো না।
কেন? মানুষতো ব্যবহার বাড়াচ্ছে।
পাল্টা প্রশ্ন করলেন, তাহলে গাড়ি কমে যাচ্ছে কেন?
আমিও জানতে চাইলাম কেন?
বললেন, প্রথম দিকে যারা গাড়ি কিনে চালকসহ উবারে দিয়েছিলেন, তারা অনেকেই গাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন।

নিজের দিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, বনানী থেকে বনশ্রী গেলাম এক যাত্রী নিয়ে। ভাড়া দিলো ২৫ টাকা। তার নাকি ১০০ টাকা ডিসকাউন্ট আছে। অথচ এ পথে ভাড়া আরো বেশি হবে। আমার ফোনটা কাজ করছিল না, তাই দেখতে পাচ্ছিলাম না। উবারে অভিযোগ দেওয়ার জন্য কয়েকবার ফোন দিলাম, ধরলো না। তবে ওই যাত্রী পরেরবার উবারে উঠলে সেই ভাড়া কেটে রাখা হবে বলেও আশ্বস্ত তিনি।

চালক জানান, আজ সারাদিনে ছোট ছোট ৯টি ট্রিপ দিয়েছি। সব মিলিয়ে ২৫শ টাকার মতো হাতে এসেছে। কয়েকজনে কার্ডে টাকা দিয়েছেন। গ্যাস নিয়েছি ৮শ টাকার। বাকি টাকার মধ্যে গাড়ির মালিক কত পাবে? আর চালককেই বা কত দেবেন? এই শহরে এখন ১৮ হাজার টাকার নিচে চালক পাওয়া যায় না। আর ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার পর কি আর গাড়ি চালানো যায়!

গাড়ির মালিকদের এতো ক্ষতি হলে উবারতো চলবে না! কি করা উচিত? জানতে চাইলাম। জবাবে তিনি বলেন, উবার এখন ২৫ শতাংশ নেয় ভাড়ার। সেটি কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা উচিত। শুধু যাত্রীদের প্রণোদনা দিলেই হবে না। চালক ও গাড়ির মালিকদেরও প্রণোদনা দিতে হবে।

তবে যারা সস্তা গাড়ি কিনে নিজে চালাবেন, তারা কিছু লাভ করতে পারবেন। ভাড়ায় দিয়ে পোষাবে না।

বনানীর পর আর যানজট নেই। ৭টায় নামলাম বিমানবন্দরে। নামার সময় বললেন, 'আমাদেরতো আর বাড়তি টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। ' আমি না শোনার ভান করলাম!

বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
এমএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।