শুক্রবার (২১ জুলাই) প্রায় ৭০০ বছর ধরে প্রচলিত লাকড়ি তোড়া উৎসব দরগাহের বার্ষিক ওরসের তিন সপ্তাহ আগে অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার বাদ জুমা শাহজালাল মাজার থেকে বের হয়ে লাক্কাতুরা চা বাগানে গিয়ে লাকড়ি তোড়ায় অংশ নেন সহস্রাধিক ভক্ত আশেকান।
দরগাহ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, দরগাহ থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে লাক্কাতুরা ও মালনি ছড়া চা-বাগানের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত একটি টিলার জঙ্গল থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করা হয়।
এদিন ভক্ত আশেকানরা হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ শরীফে সমবেত হয়ে জুমার নামাজ শেষে মিলাদ শরীফ ও দোয়ার পর লাকড়ি নিয়ে পুনরায় দরগাহ শরীফে ফিরে আসেন।
দরগাহের মোতাওয়াল্লী ফতেহ উল্লাহ আল আমান বাংলানিউজকে বলেন, শাহজালাল (রহ.) জীবদ্দশায় এভাবে লাকড়ি সংগ্রহ করে রান্না করা হতো বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেই ঐতিহ্য স্মরণ করে ৭০০ বছর ধরে ওরসের তিন সপ্তাহ আগে লাকড়ি তোড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়। সংগ্রহ করা লাকড়ি নির্দিষ্ট স্থানে রাখা হয়। সংগ্রহ করা এসব লাকড়ি ওরসে শিরনির রান্নাবান্নায় প্রতীকী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
দরগাহ কমিটি সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো আরবি বর্ষের শাওয়াল মাসের এ দিনটি শুধু লাকড়ি ভাঙার উৎসব হিসেবেই পালিত হয় না এর সঙ্গে প্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িত। ১৩০৩ সালের এ দিনে হযরত শাহজালাল (রহ:) অত্যাচারী রাজা গৌড়গোবিন্দকে পরাজিত করে সিলেট জয় করেন।
এরপর রান্নার প্রয়োজনে তিনি শহরতলীর লাক্কাতুরা থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করেন। সেই বিজয়ের স্মারক হিসেবে হিজরি বর্ষপঞ্জির দশম মাস শাওয়ালের ২৬ তারিখে লাকড়ি ভাঙা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
জনশ্রুতি রয়েছে, লাক্কাতুরা নামটিও লাকড়ি তোলা উৎসব থেকে এসেছে। লাকড়ি ভাঙার শোভাযাত্রাটি ভক্ত আশেকানদের কাছে হযরত শাহজালাল (রহ:) ওরসের প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভক্ত আশেকানরা শান্তিপূর্ণভাবে লাকড়ি ভাঙা উৎসবে যোগ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
এনইউ/আরআর