ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

স্কুলে যেতে পারছে না মিরাজ

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
স্কুলে যেতে পারছে না  মিরাজ বিরল রোগে আক্রান্ত মিরাজ

লালমনিরহাট: বিরল রোগে শরীর থেকে অনবরত রস বের হওয়ায় স্কুল যাওয়া বন্ধ রয়েছে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র মিরাজের (১২)। টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছে না তার পরিবার।

মিরাজ লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার পুর্ব সিন্দুর্না গ্রামের ভূমিহীন দিনমজুর আব্দুল হামিদের ছেলে। সে স্থানীয় হাতীবান্ধা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র।

মিরাজের মা লাইলী বেগম জানান, ৬ বছর বয়সে মিরাজের শরীরে এক ধরনের চুলকানি হয়। এর পরে চুলকানিতে এক পর্যায়ে ঘা হয়ে যায়। আস্তে আস্তে যা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এখন এ ঘা থেকে অনবরত রস বের হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. লাইজু নুরনবী’র চিকিৎসা নেওয়া হয়। কিন্তু তাকে সম্পুর্ণ সুস্থ করা সম্ভব হয়নি। এখন মিরাজের গোটা শরীর ফুলে যাচ্ছে ও শ্বাস কষ্ট দেখা দিয়েছে।

চিকিৎসকরা তাদেরকে (মিরাজের পরিবার) বলেছেন, মিরাজ কি ধরনের রোগে আক্রান্ত তা বলা না গেলেও উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এর জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। টাকার অভাবে বর্তমানে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

শরীর দিয়ে রস পড়ার কারনে কোনো বন্ধু তার সঙ্গে মিশতে চায় না। ক্লাশেও তার পাশে কেউ বসতে চায় না। তাই কিছু দিনের জন্য তাকে বিদ্যালয় যেতে নিষেধ করা হয়েছে বলেও দাবি মিরাজের মায়ের।

মিরাজ বলে, আমি সুস্থ হয়ে স্কুলে যেতে চাই। ডাক্তার বলেছে ভালো চিকিৎসা হলে আমি সুস্থ হবো। কিন্তু আমার বাবা-মায়ের সেই টাকা নেই। আমি কি চিকিৎসার অভাবে মারা যাবো ? এমন প্রশ্ন তুলেন মিরাজ।

হাতীবান্ধা উপজেলা সির্ন্দুনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আমিনুর রহমান আশা বলেন, মিরাজের বাবা দিন মজুর। সে কারণে চিকিৎসার অভাবে মিরাজের অবস্থা প্রতিনিয়ত খারাপের দিকে যাচ্ছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

হাতীবান্ধা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাপলা বেগম বলেন, মিরাজ মেধাবী ছাত্র ঠিকই। তবে তার শরীর থেকে রস বের হওয়ায় অন্য শিক্ষার্থীরা তার পাশে বসতে অনীহা প্রকাশ করায় আপতত মিরাজকে বিদ্যালয় আসতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও সে নিয়মিত বিদ্যালয় আসে।
 
ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ মেয়াদী উন্নত চিকিৎসা করা হলে মিরাজকে সুস্থ্য করা সম্ভব বলেও দাবি করেন প্রধান শিক্ষিকা।

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রমজান আলী বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।

মিরাজের চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. লাইজু নুরনবী বাংলানিউজকে জানান, মিরাজের রোগটা নিশ্চিত করা যায় নি। তবে দীর্ঘ মেয়াদী উন্নত চিকিৎসা হলে নিরাময় করা সম্ভব বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।