২০১২ সালের মানবপাচার আইনের ৭ ধারায় পিতা-পুত্রকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া একই আইনের ৯ ধারা মোতাবেক মানবপাচারকারী পুত্রকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে বরিশালের মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের এই দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডিত মানবপাচারকারীরা হলেন- বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাকরদা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদের সিকদার ও তার ছেলে ওহিদুল ইসলাম সিকদার।
আদালত সূত্র জানায়, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভোজমহল গ্রামের বাসিন্দা নেছারীয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. ইব্রাহীমের ছেলে মাহামুদুল হাসানকে চাকরির মাধ্যমে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে ২০১৪ সালের ১৮ জুন ওমান নিয়ে যান আসামি আব্দুল কাদের সিকদারের ছেলে ওহিদুল ইসলাম সিকদার।
কিন্তু তাকে যে কাজের কথা বলে নেওয়া হয় সেই কাজ না দিয়ে মরুভূমিতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে দেওয়া হয়। এমনকি তার পাসপোর্ট এবং ভিসাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আটকে রাখা হয়। দুই মাস পরে বাদী মাহমুদুলের বাবা বিষয়টি জানতে পেরে ছেলেকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য আসামি ওহিদুলকে বলেন। দেশে পাঠানোর জন্য ওহিদুলের দাবি অনুযায়ী আরও এক লাখ টাকা পরিশোধ করেন বাদী মো. ইব্রাহীম। কিন্তু তাকে দেশে ফেরত না পাঠিয়ে সময়ক্ষেপণ করেন।
সর্বশেষ ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট ওহিদুল মামলার বাদী ইব্রাহীমকে ওমানে তার ছেলে অসুস্থ হয়েছে বলে জানায়। এর কয়েকদিনের মাথায় ২১ আগস্ট ওমানের একটি হাসপাতালে মাহামুদুলের মৃত্যু হয়েছে বলে তার বাবাকে জানান ওহিদুল। পরবর্তীতে বাংলাদেশে ওমানের দূতাবাসে যোগাযোগ করেন বাদী।
একই বছরের ১৪ অক্টোবর দূতাবাস থেকে তাকে জানানো হয় ওমানে এক বাংলাদেশির হাতে তার ছেলে মাহামুদুল খুন হয়েছেন। এই ঘটনায় ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি বাবা মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে ওহিদুল ও তার বাবা আব্দুল কাদের সিকদার, তার মা ও স্ত্রীকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
একই বছরের ২২ জুন সিআইডি’র পরিদর্শক (ওসি) তারিকুল ইসলাম পিতা-পুত্রকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারক ৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
এমএস/এমজেএফ