সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় পানি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ এলাকা থেকে নেমে গিয়ে যমুনার তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।
তবে সারিয়াকান্দি উপজেলার চিত্রটা ভিন্ন।
বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও যমুনার তীবরর্তীসহ বিভিন্ন এলাকায় সারিবদ্দভাবে ফেলে রাখা হয়েছে ঝিটকি বা ভর জাল। আবার অনেকেই নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ফেলেও এসব মাছ ধরছেন। শিশু পানিতে ডুবিয়ে ডুবিয়ে মাছ ধরার কাছে ছোট ছোট পেলা জাল ব্যবহার করছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বন্যা আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বানভাসি মানুষের মাছ ধরার এমন কর্মযজ্ঞতার দৃশ্য নজর কাড়ে।
ঝিটকি বা ভর জালে মাছ ধরতে দেখা যায় সিংহভাগ বানভাসি মানুষকে। বিশেষ কায়দায় বানানো হয় এসব জাল। বাঁশের লাঠি, খুঁটি, লাইলন সূতো, পাটের দড়ি ও নেটের সমন্বয় ঘটিয়ে তৈরি করা হয় এসব জাল। পরে জালের ফ্রেমের গোঁড়ার অংশ মাটিতে পুতে রাখা বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পানিতে ফেলা হয়।
মাছ জালে উঠতে কিছু সময় পানিতে ডুবে রাখা হয়। এরপর জালের গোঁড়ায় লাগানো বাঁশে পায়ের চাপ প্রয়োগ করে পানি থেকে জাল উঠানো হয়। এভাবে সেই জালে ওঠে আসে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
কখনো বেশি আবার কখনো বা কম মাছ ওঠে জালে। পরে ময়লা-আর্বজনা বেছে ফেলে দিয়ে মাছগুলো খাইল (স্থানীয় ভাষায়) বা অন্য কোনো বাসনে তোলা হয়।
জুলফিকার, মনি, রুবেল, হাসান, রিমন, ফাতেমা, গুলনাহারসহ একাধিক বানভাসি বাংলানিউজকে জানান, বসতভিটা এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। বানভাসিরা বাঁধ ও বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে আছেন।
ঘরের খাবার অনেকের শেষ হয়ে গেছে। অনেকের শেষ হওয়ার পথে। সবাই না পেলেও যারা পেয়েছিলেন তাদের ত্রাণের খাবারও শেষ। দিনমজুরের কাজও প্রত্যহ পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু কোন না কোনভাবে তো বেঁচে থাকতে হবে। তাই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা রয়েছেন বানিভাসিরা যোগ করেন এসব ব্যক্তিরা।
তারা জানানা, এসব জালে ট্যাংরা, গোলসা, পুঁটি, শোল, বোয়াল, কাতল, গোচইসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে।
তাদের ভাষায়, এসব মাছ ‘পাঁচ মিশালী’ হিসেবে পরিচিত। পরে এসব মাছ তারা বাজারে বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ কিছু মাছ খাবার জন্য রেখে দেন।
দিনশেষে প্রায় ১৫০-২০০ টাকার মাছ বিক্রি করেন তারা। এই টাকা দিয়ে স্বল্প দামের খাবার সংগ্রহ করেন। এভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে দু’মুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বানভাসি মানুষগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
এমবিএইচ/এএটি/