ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই দুই নারীকে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই দুই নারীকে হত্যা

ঢাকা: ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই দুই নারীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।  

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

রাজধানীর কদমতলী থানার পূর্ব জুরাইন এলাকার দুই নারীর মরদেহ উদ্ধারের পৃথক দুটি ঘটনায় পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আসামিরা হলেন- জামাল খান পাটোয়ারী, রাজিব হাওলাদার, মো. জাকির শিকদার, মো. রফিকুল ইসলাম ও মফিজ উদ্দিন সাগর।

তাদের দেওয়া দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই তারা দুই নারীকে হত্যা করেছে। টাকা পয়সা চুরি মূল বিষয় ছিলো না।

ঘটনার দুটির আসামিরা দুই নারীর পরিচিত ছিল বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

গত ১৮ জুন দিবাগত রাতে কদমতলীর পূর্ব জুরাইন এলাকা থেকে পারুল বেগম ও ১০ জুলাই পূর্ব জুরাইনের শিশু কবরস্থান এলাকা থেকে ফরিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তদন্তে জানা যায়, ওই দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারি বিভাগের ডিসি বলেন, জামাল ও রাজীব পরস্পর বন্ধু। রাজীব ও নিহত পারুল পূর্বে একটি কীটনাষক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। পারুলের স্বামী লিটন একজন গাড়ি চালক। মাঝে মাঝে তিনি বাড়ির বাইরে থাকতেন। তা জানতেন রাজীব। রাজীব তার বন্ধু জামালের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করে। জামাল একজন পেশাদার চোর। দু্ই বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করে স্বামীর অনুপস্থিতে বাসায় গিয়ে মালামাল চুরি করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজীব পারুলকে ফোন দিয়ে রাতে বেড়াতে আসার কথা জানায় এবং বেড়াতে যায়। যাবার সময় রাজীব ও জামাল পেয়ারা, আম, হালিম ও দুটি কোমলপানীয়ের (স্পিড) বোতল নিয়ে যায়। কৌশলে তারা হালিম ও কোমলপানীয়তে ঘুমের ওষুধের গুড়া মিশিয়ে দেয়। বাসায় গিয়ে গল্পের ছলে সেগুলো খাওয়ায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পারুল গভীর ঘুমে ঢলে পড়ে। এরপর দুই জনে মিলে পারুলকে ধর্ষণ করে। কিন্তু একাধিকবার ধর্ষণের এক পর্যায়ে পারুল কিছুটা চেতনা ফিরে পেয়ে চিৎকার চেচামেশি করতে চাইলে জামাল তার গলা চেপে ধরে আর রাজীব মুখ চেপে ধরে এবং মুখ ও হাত-পা বেধে ফেলে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে পারুলের স্বর্ণের নাকফুল, ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

অন্যদিকে ফরিদা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ডিসি ফরিদ বলেন, শামীম ও সাগরের সঙ্গে একই গার্মেন্টে চাকরি করতো ফরিদা। স্বামী মারা যাওয়ার পর ফরিদা একা থাকা শুরু করেন। এই সুযোগ নিয়ে সাগর, শামীম ও তাদের বন্ধু জাকির ফরিদার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৭ জুন রাতে জোরপূর্বক তিনজনই ফরিদাকে ধর্ষণ করে। এরপর ফরিদা চিৎকার শুরু করলে চাকু দিয়ে মুখে আঘাতে করে। পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।

ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের দুই ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
এসজেএ/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।