ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কালুখালী- টুঙ্গিপাড়া রেলপথ নির্মাণে বাড়ছে ব্যয়-মেয়াদ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
কালুখালী- টুঙ্গিপাড়া রেলপথ নির্মাণে বাড়ছে ব্যয়-মেয়াদ রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত যাবে রেলপথটি। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন রেলপথ নির্মাণে ফের  ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।  তৃতীয় ধাপে ‘কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশন এবং কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ২১ মাস বেড়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ব্যয় ১৮৫ কোটি ১২ লাখ টাকা  বেড়ে ২ হাজার ২০৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দাঁড়াচ্ছে।

দ্বিতীয় ধাপে বাড়ার পর আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মেয়াদে মোট ১২৩ দশমিক ৯৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্পটির বর্তমান ব্যয় নির্ধারিত রয়েছে ২ হাজার ২৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান ও সমাধিস্থল টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারিত হয়েছিলো ১ হাজার ১০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

  সে সময় ২০১৩ সালের জুনে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো।

রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশনে ৮০ দশমিক ২৫ কিলোমিটার রেলপথ ফের চালু এবং কাশিয়ানী থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৪৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হবে।  

প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নে রেলপথে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। এ রুটে নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব রেল যোগাযোগ সেবা পাবেন যাত্রীরা।

গত মে মাস পর্যন্ত সাত বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩১১ কোটি ৬৮ কোটি টাকা বলেও জানিয়েছে সূত্র।

ব্যয় বাড়ানোর এ প্রস্তাব নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে কয়েকবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। চলতি সপ্তাহের সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) জুয়েনা আজিজ।

বুধবার (১৯ জুলাই) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আবারও সময় ও অতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রশ্ন তুলেছে পিইসি সভা। একই সঙ্গে অযৌক্তিক ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়নেরও নির্দেশ দিয়েছে।
 
অন্যদিকে রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় কালুখালী-টুঙ্গিপাড়া রুটে ছয়টি নতুন রেলস্টেশন, ১৫টি সিগন্যাল স্টেশন এবং ৬৭টি নতুন ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কাশিয়ানী থেকে গোপালগঞ্জ, গোবরা, টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত এ ছয়টি স্টেশন হচ্ছে।   গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া মোড়ে নতুন ফোরলেন ফ্লাইওভারও তৈরি হচ্ছে। এ কাজগুলো প্রাথমিক পরিকল্পনায় ছিলো না।

এ কারণেই তৃতীয়বারের মতো প্রকল্পের সময় এবং ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
আবার শুরুর পর থেকে ৭০ একর জমি অধিগ্রহণ বাবদ ২৫ কোটি টাকা, কয়েক ধাপে মাটি পরীক্ষা করায় পরামর্শক সেবা ও সুপারভিশন খাতে ২ কোটি টাকা, ফার্নিচার কেনা বাবদ ৩ কোটি টাকা এবং কাশিয়ানী-টুঙ্গিপাড়া সেকশনে ১১ কিলোমিটার মেইন লাইন বৃদ্ধিতে ২৮৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে।
 
আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে  ঢাকা থেকে মাওয়া-জাজিরা (পদ্মা রেলসেতু) হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়। পরবর্তী পর্যায়ে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়েছে।

এ রেলপথের সঙ্গে বর্তমানে পরিত্যক্ত কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া সেকশনটিও ফের চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া-পোড়াদহ-গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রধান লাইনের শাখা হিসেবে ১৯৩২ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত চালু ছিলো কালুখালী–ভাটিয়াপাড়া সেকশন রেলপথটি।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত মাসের শুরুতে (জুন) নির্মাণাধীন রেলপথটি পরিদর্শন করেছি। কাজ চলছে। তবে রেলপথ জুড়ে বেশ কিছু নতুন নতুন কাজ বাস্তবায়িত। ফলে প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়ছে।
 
‘রেলপথটি কালুখালী থেকে শুরু হয়ে জাতির জনকের সমাধিস্থল টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে শেষ হবে।   প্রধানমন্ত্রীরও বিশেষ অগ্রাধিকারে রয়েছে এটি। এ কারণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছি। আশা করছি, ২০১৯ সালেই সব কাজ সম্পন্ন হবে,  মেয়াদ-ব্যয় আর বাড়বে না’।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ