ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে তার স্ত্রী ও স্ত্রীর প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ওই নারীকে ২০ হাজার টাকা এবং তার প্রেমিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্দুল হামিদ এই রায় দেন।

সাজার আদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জেলার শ্যামনগর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী জেসমিন সুলতানা (৩৪) ও তার প্রেমিক একই গ্রামের গৌরীপুর ধাপুয়ার চক গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরুজ্জামান মুকুল (৪২)।

 

মামলার বিবরণে জানা গেছে, জাকির হোসেন উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে মোহরার হিসেবে কাজ করতেন। তার স্ত্রী জেসমিনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন প্রতিবেশী মনিরুজ্জামান মুকুল। বেশ কয়েক মাস অনৈতিক সম্পর্কের পর মনিরুজ্জামান মুকুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেন জেসমিন। এক স্ত্রীর দুই স্বামী থাকতে পারে না- জেসমিনের এমন বক্তব্যের কারণে জাকিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার প্রেমিক। পরে ২০০৭ সালের ৮ জুন রাত ৯টার দিকে মাছের ঘের থেকে বাড়ি ফিরছিলেন জাকির। এসময় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ কাদার মধ্যে ফেলে রাখা হয়। এ ঘটনার পরদিন নিহত ব্যক্তির বাবা কেরামত আলী গাজী বাদী হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে শ্যামনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ জেসমিনকে গ্রেফতার করলে তিনি স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জেসমিন জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, জাকিরকে হত্যার জন্য মনিরুজ্জামান মুকুল ২০ হাজার টাকা দিয়ে জবেদ আলী, ওসমান, ওমর আলী ও রেজাউল ইসলামকে ভাড়া করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) হযরত আলী ২০০৭ সালের ২৪ নভেম্বর ওই দু’জন এবং গৌরীপুর গ্রামের ফকির আহম্মেদ মিস্ত্রীর ছেলে জবেদ আলী মিস্ত্রী (৪৬), কালাম মিস্ত্রীর ছেলে ওসমান মিস্ত্রী (৫০), তার ভাই ওমর ফারুক মিস্ত্রী (৫৮), সোলায়মান মিস্ত্রীর ছেলে রেজাউল ইসলাম (৪২), গণি গাজীর ছেলে মনিরুল ইসলাম (৩৫) ও কালিগঞ্জ উপজেলার খড়িতলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শহীদ সরদারের (৫০) নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার নথি ও ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বিচারক জেসমিন ও মনিরুজ্জামান মুকুলকে এ দণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকিদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

সাতক্ষীরা আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ জিয়াউর রহমান জিয়া বাংলানিউজকে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।