ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৫ হাজার টাকার কৃষি ঋণ ২২ হাজারেও শেষ হয়নি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
৫ হাজার টাকার কৃষি ঋণ ২২ হাজারেও শেষ হয়নি প্রাণ হরি দাস (বামে)

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক বৃদ্ধের বয়স্ক ভাতা থেকে কৃষি ঋণের টাকা জোরপূর্বক আদায় করার অভিযোগ উঠেছে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ৫ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধের নামে গত ৮ বছরে বয়স্ক ভাতা থেকে ২২ হাজার টাকা কেটে নিলেও ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাননি প্রাণ হরি দাস।

জোরপূর্বক ঋণের টাকা বয়স্ক ভাতা থেকে কেটে নেওয়ায় মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে প্রাণ হরি দাস কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লার কাছে অভিযোগ করেন।

ভ‍ুক্তভোগী ওই বৃদ্ধ কমলনগর উপজেলা চর কাদিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত কামিনী কুমার দাসের ছেলে।

প্রাণ হরি দাস জানান, ১৯৯৮ সালে কৃষি ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখা থেকে ৫ হাজার টাকার কৃষি ঋণ নেন। গত ৮ বছর ধরে ওই ঋণ পরিশোধের নামে ভাতা উত্তোলনের দিন উত্তোলিত টাকা থেকে ঋণের টাকা কেটে নেয় ব্যাংক। এভাবে ভাতা থেকে ২২ হাজার টাকা কেটে নিলেও আরও টাকা দাবি করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।  
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ‍কাছে অভিযোগ দিতে যান প্রাণ হরি দাসবর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় অভাবে রয়েছেন প্রাণ হরি দাস। তিনি জানান, গত ৭ জুলাই ব্যাংকে বয়স্ক ভাতার ৩ হাজার টাকা উত্তোলন করতে যান। এ সময় ব্যাংক তাকে ১ হাজার টাকা দিয়ে ঋণের নামে বাকি ২ হাজার টাকা কেটে নেয়।

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে প্রাণ হরি দাসের ছেলে মেঘনাথ দাস তার বাবার নামে ৫ হাজার টাকা ঋন নেন। অসহায় ওই বৃদ্ধ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ২০০২ সালে কৃষি ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখা থেকে উকিল নোটিশ দেওয়া হয়। ওই উকিল নোটিশে সুদ-আসলসহ ৭ হাজার ২শ’ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।  

সরজমিনে ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংক নথিতে ২০০৯ সালে প্রাণ হরি দাসের নামে ৬ হাজার টাকার ফের ঋণ নেওয়ার তথ্য মেলে। কিন্তু প্রাণ হরি দাস এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যাংক কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ঋণ আদায় না করে নির্দিষ্ট সময় এলে ঋণ পরিশোধ দেখিয়ে ফের নতুন করে ঋণের খাতা খুলে ওই বৃদ্ধের নামে। এভাবে বৃদ্ধের নামে তিনবার ঋণ গ্রহণ দেখায় ব্যাংক। এদিকে ৫ বছর আগে প্রাণ হরি দাসের ছেলে মেঘনাথের মৃত্যু হয়। একা হয়ে পড়েন অসহায় ওই বৃদ্ধ।

এ ব্যাপারে কৃষি ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখার ব্যাবস্থাপক আবদুল কাইয়ুমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দুইবার তার নামে ঋণ নবায়ন করা হয়েছে; লোকবলের অভাবে মাঠে গিয়ে ঋণের টাকা আদায় সম্ভব হয়নি। বয়স্ক ভাতা থেকে ঋণ পরিশোধে ২২ হাজার টাকা কেটে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন আবদুল কাইয়ুম। আরও প্রায় ২ হাজার টাকা ব্যাংক পাওনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা বলেন, বৃদ্ধের অভিযোগ পেয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপকের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।