নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকমাস যাবত বিক্রির দেন-দরবার চলছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বড় গ্রুপের সঙ্গে। তবে বিদেশি কোনো বড় প্রতিষ্ঠানই মালিকানা কেনায় এখনও পর্যন্ত আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
জানা যায়, অনেক বেশি টাকা হাঁকছে ইউনাইটেড গ্রুপ। যার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেও পিছিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো।
গুলশান লেকের পাশে ২০০৬ সালে পাঁচতারকা হোটেলের মতো ব্যবস্থা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ইউনাইটেড হাসপাতাল। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়া এ হাসপাতালকে অনেকেই বলতে শুরু করেন পাঁচতারকা হোটেল। তবে চিকিৎসার মানের কথা বললেও কোনোদিনই খুব ভালো সেবা প্রতিষ্ঠানটি দিতে পারেনি।
২০০৮ সালে সেসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মান্না হার্টের সমস্যা নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হলেও চিকিৎসকের চরম অবহেলায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু নিয়ে কোনো সদুত্তর এখনও দিতে পারেনি ইউনাইটেড।
এরকম অভিযোগের শেষ নেই হাসপাতালটির বিরুদ্ধে। লাশ আটকে রেখে টাকা দাবি, অপ্রয়োজনে যখন তখন রোগীকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া, অকারণে আইসিইউ, সিসিইউতে রেখে জুজুর ভয় দেখানো, শিশুর জন্মের পর বাবা-মায়ের আবেগ জিম্মি করে অসুস্থতার কথা বলে বিশেষ টিউবে রেখে টাকা আদায়, প্রসূতির ভুল চিকিৎসা ছাড়াও হাজারটি অভিযোগ রয়েছে ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই সুনাম থেকে দুর্নাম অর্জন করেছে বেশি। চিকিৎসার সঙ্গে ‘সেবা’ শব্দটি বাদ হতে চলেছে প্রতিষ্ঠানটিতে। এখানে চিকিৎসার সঙ্গে ‘টাকা’ শব্দটিই বেশি মানানসই।
ভিআইপি/ডিলাক্স স্যুইট থেকে হাসপাতালটির রুম ক্যাটাগরি শুরু। যার ভাড়া প্রতিদিন ২২ হাজার টাকা। আর সবচেয়ে কম সাধারণ বেডের খরচ দিনপ্রতি তিন হাজার টাকা। এসব দেখেই পাঁচতারকা হোটেলের সঙ্গে তুলনা চলে আসে। আর এটা যে মধ্যবিত্তেরও নাগালের অনেকটা বাইরে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
চিকিৎসার নামে ঠগবাজি করে উচ্চতবিত্তের পকেট কেটেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না হাসপাতালটির। শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয়ে মালিকানা পরিবর্তন হলেও তাতে হাসপাতালের গুণগত কোনো পরিবর্তন হবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। আর যদি কেউ কেনেন তিনি এটাকে আদৌ হাসপাতাল হিসেবে রাখবেন কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে।
ইউনাইটেড হাসপাতালের বক্তব্য
নিউজটি প্রকাশের পর দুর্নাম কুড়নোর বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য, মানসম্মত সেবা নিয়ে রোগীরা সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছে। ইউনাইটেড হাসপাতাল মুনাফা নয়, সেবার ব্রত নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে হাসপাতাল বিক্রির বিষয়ে কোনো মন্তব্য প্রতিষ্ঠানটি করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭/আপডেটেড: ১৬২৪ ঘণ্টা
এএ