মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। নুহাশ পল্লীতে এই কথাশিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে প্রকাশকদের।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন। পুলিশ কর্মকর্তা পিতা ফয়েজুর রহমান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হন। তার মা আয়েশা ফয়েজ, যিনি নিজেও লেখালেখি করে সুনাম কুড়িয়েছেন।
হুমায়ূন ১৯৬৭ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন। সে সময় তিনি রাজশাহী বিভাগে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হন। এরপর ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেন গল্পের এই জাদুকর। ১৯৭২ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশ হয়। এতেই তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এরপরের উপন্যাসেও করেন বাজিমাত। ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’ প্রকাশের পর ব্যাপক সমাদৃত হন তিনি।
দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে লেখালেখি করে সৃষ্টি করেন কালজয়ী চরিত্র মিসির আলী ও হিমু। সহজ, সরল, প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত লেখনীর কারণে তিনি অনন্য।
কর্মজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলেও লেখালেখি ও নাটক-সিনেমা নির্মাণকেই পেশা হিসেবে নেন।
অনন্য গুণের কারণে ২০১০ সালে একবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
হুমায়ূন আহমেদ এমন এক নাম, যার বই এখনও লাইন ধরে কেনেন পাঠকরা। বইমেলায় তার বইয়ের স্টলগুলোতে প্রতিদিনই থাকে উপচেপড়া ভিড়।
হুমায়ূন আহমেদের উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে-হরতন ইস্কাপন, হিমুর বাবার কথামালা, আমি ও মিসির আলী, হিমু রিমান্ডে, মিসির আলীর চশমা, জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প, মধ্যাহ্ন, দীঘির জলে কার ছায়া গো, আজ হিমুর বিয়ে, লিলুয়া বাতাস, লীলাবতী, আগুনের পরশমনি ও শ্রাবণ মেঘের দিন।
চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে শঙ্খনীল কারাগার, চন্দ্রকথা, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি। রয়েছে আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই এর মতো নাটক।
হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
ইইউডি/আরআর