ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সংসদ-সদস্যই সাংবিধানিক পদ, ‘সাংসদ’ নয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
সংসদ-সদস্যই সাংবিধানিক পদ, ‘সাংসদ’ নয় সংসদ অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের ফাইল ফটো

ঢাকা: ‘সংসদ সদস্য’ পদটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টানাহেঁচড়া চলছে মিডিয়ায়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার তোয়াক্কা না করে কোনো কোনো সংবাদপত্র-সংবাদমাধ্যম অবলীলাক্রমে সংসদ সদস্যদের সংক্ষেপে ‘সাংসদ’ লিখেই যাচ্ছে। আর মেম্বার অব পার্লামেন্ট বা সংক্ষেপে এমপি লিখছে কিছু পত্রিকা। এমনকি সংসদ অধিবেশনেও সদস্যদের কেউ কেউ ‘সাংসদ’ শব্দটিই ব্যবহার করে যাচ্ছেন। তবে সংবিধানের নিয়ম মেনে ‘সংসদ–সদস্য’ টার্মটিও লিখে যাচ্ছেন ‍কেউ কেউ।

তাই কেউ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হলে তার পরিচয় কি হবে তা নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আসলে পর্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী জনপ্রতিনিধিদের পরিচয় কি হবে?  

সংবিধান ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের দফা ২ এ বলা আছে, ‘একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত তিন সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের ৩ দফার কার্যকরতাকালে উক্ত দফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত হইবে; সদস্যগণ সংসদ-সদস্য বলিয়া অভিহিত হইবেন।

সংসদ সদস্যদের পরিচয় নিয়ে সংবিধানে যা লেখা আছে।
 
এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সংসদ-সদস্যদের ‘সংসদ-সদস্য’ হিসেবে উল্লেখ করা আছে। অতএব সংবিধানে যেটা আছে সেটা লেখাই উত্তম। ‘সাংসদ’ শব্দটি যেহেতু সংবিধানে নেই, তাই এটি না লেখাই ভালো।
 
যদিও এ বির্তকের অবসান ঘটাতে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ স্পিকার থাকাকালে রুলিং দিয়ে সংসদকে অবহিত করেছিলেন, ‘সংসদ-সদস্যদের জন্য সংসদ-সদস্য শব্দটিই ব্যবহার করতে হবে। সাংসদ বলা বা লেখা যাবে না। ’
 
তারও আগে স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারও রুলিং দিয়ে একই কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিনিও বলেছিলেন, সংবিধানে যেভাবে লেখা আছে সেভাবেই এমপিদের পরিচয় হবে। যেহেতু সংবিধানে সংসদ-সদস্য কথাটি লেখা আছে, তাই সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যই যথার্থ শব্দ।

জাতীয় সংসদের একজন সিনিয়র সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, সাংসদ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। এ নিয়ে একাধিকবার স্পিকারের রুলিং হয়েছে। তারপরেও অনেকে বলেন এবং লেখেন।
 
তবে দেশের একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিক অব্যাহতভাবে অসাংবিধানিক এই শব্দটি ব্যবহার করে আসছে। এতে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ভুল বার্তা যাচ্ছে।

যদিও সংসদের চিঠিপত্রসহ সব কার্যক্রমেও ‘সংসদ সদস্য’ শব্দটিই ব্যবহার হচ্ছে। আর বাংলা একাডেমির অভিধানেও কোথাও ‘সাংসদ’ শব্দটির উল্লেখ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এসএম/জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।