ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বামীর নির্যাতনের শিকার হাবিবা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বামীর নির্যাতনের শিকার হাবিবা

নওগাঁ: স্বামীর নির্যাতনের পর দীর্ঘ আট মাস চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনের ফিরতে পারলেন না নওগাঁ শহরের হাট-নওগাঁ মহল্লার হাবিবা খাতুন। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।

হাবিবার বাবা হাফিজুর রহমান জানান, ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট নওগাঁ শহেরর হাট-নওগাঁ কালিতলা মহল্লার অভি নামে এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় হাবিবার। মাত্র ছয় মাসের মাথায় হাবিবাকে তার বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা এনে দিতে বলেন অভি।

কিন্তু গৃহশিক্ষক বাবা তা দিতে না পারায় হাবিবার ওপর শুরু হয় নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর হাবিবা মারা গেছেন বলে খবর দেয়া হয় তার পরিবারকে। স্বজনরা গিয়ে অচেতন অবস্থায় হাবিবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে জানানো হয় যে হাবিবা বেঁচে আছেন। তবে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান থেঁতলে দেয়া হয়েছে। খাদ্যনালীতে বড় ধরনের ক্ষত হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা ১৬ দিন রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন হাবিবার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু গরিব বাবার পক্ষে তা আর হয়ে ওঠেনি।

এরপর থেকে বাবার বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল হাবিবার। অসুস্থ হওয়ার পর আর কখনও কোনো কথা বলতে পারেননি তিনি। প্রতিদিনের খাবার নাকে নল দিয়ে খাওয়াতে হতো।

তিনি আরো জানান, সোমবার রাত থেকে অসুস্থতা আরো বেড়ে যায় হাবিবার। পরে সকালে বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, নির্যাতনের পর হাবিবার স্বামী তামভি হাসান অভি, তার বাবা সামসুজ্জোহা খান বিদ্যুৎ ও মা তাহমিনাতুল মাওলাকে আসামি করে নওগাঁ সদর মডেল থানায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন হাবিবার বাবা। মামলায় অভি ও তার বাবা গ্রেফতার হলেও বাবা পরে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হন। আর মাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনাম মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, যেহেতু হাবিবার বিষয়টি নিয়ে মামলা আছে, তাই ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অসুস্থতার শুরুর দিকে হাবিবাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল। বারবার বলার পরও সেখান থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত আদালতের মাধ্যমে আবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা দেয়নি। এতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে মামলার অগ্রগতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad