ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

চাল খালাসে বিলম্ব হলেও সমস্যা হবে না, দাবি মন্ত্রণালয়ের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
চাল খালাসে বিলম্ব হলেও সমস্যা হবে না, দাবি মন্ত্রণালয়ের ফাইল ছবি

ঢাকা: ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা চাল চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে খালাস করতে বিলম্ব হলেও এতে কোনো সমস্যা হবে না বলে দাবি করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। 

ভিয়েতনাম থেকে প্রথম দফায় আসা চাল খালাস না হতেই এসেছে দ্বিতীয় দফার চাল। কয়েকদিন পর আসছে আরও একটি চালান।

এ  অবস্থায় চাল খালাস নিয়ে বন্দরে জটলা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
 
কিন্তু মন্ত্রণালয় বলছে, সিডিউল অনুযায়ী চাল খালাস হচ্ছে। চাল খালাসে বিলম্ব হলেও সমস্যা হবে না।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে চার দিন আগে আসা চালের প্রথম চালান লাইটার জাহাজ সংকটের কারণে খালাস করা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে সোমবার (১৭ জুলাই) এসেছে চালের দ্বিতীয় চালান।  

সরকারি গুদামে খাদ্যের মজুদ বৃদ্ধি ও চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে জিটুজি (সরকার টু সরকার) চুক্তির আওতায় ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি করছে।  

আড়াই লাখ টন চালের প্রথম চালানের ২০ হাজার টন নিয়ে একটি জাহাজ বন্দরে পৌঁছুলেও, সেই চাল এখনো জেটিতে পৌঁছায়নি। এর মধ্যে সোমবার (জুলাই ১৭) ‘এমভি প্যাক্স’ নামের জাহাজে পৌঁছায় ২৭ হাজার টনের দ্বিতীয় চালান।
 
প্রথম দফায় ২০ হাজার টন চাল নিয়ে ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে ‘এমভি ভিসাদ’।  

জাহাজটি চালের নমুনা পরীক্ষা, কাস্টমস ছাড়পত্র সংগ্রহের পর বন্দরের জেটিতে বার্থিং (জাহাজ ভেড়ানোর) করার অনুমতি পেলেও বহির্নোঙরে চাল খালাসের উপযোগী ছোট জাহাজ (লাইটার) না পাওয়ায় দ্রুততম সময়ে জাহাজটি থেকে চাল খালাস শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
 
বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, রোববার (১৬ জুলাই) থেকে উত্তাল বহির্নোঙরে বড়জাহাজের পাশে ছোট (লাইটার) জাহাজ ‘এমভি জুপিটার’ এ দেড় হাজার 
টন চাল খালাস করা হচ্ছে।  

এর উদ্দেশ্য বন্দরের ৮ নং জেটিতে সরাসরি ভেড়াতে মূল জাহাজটির ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশ) ৮.৫ মিটারে কমিয়ে আনা। বর্তমানে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরের জেটিতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘে্যর জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব।  
 
জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর পর সেখান থেকে ক্রেনের সাহায্যে চালগুলো ইয়ার্ডে অথবা সরাসরি ট্রাকে নামানো হবে। এরপর চট্টগ্রাম, সিলেট ও ঢাকার সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে চালগুলো পাঠানো হবে।
 
চাল খালাস বিলম্বের বিষয়ে খাদ্যসচিব মো. কায়কোবাদ হোসেন সোমবার বিকেলে মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, চাল খালাস করা একটি সিস্টেমের ব্যাপার। দেরি হচ্ছে এটা ব্যাপার না, চাল যখন এসেছে তখন চাল খালাস হবেই।
 
খাদ্য সচিব আরও দাবি করেন, সিডিউল অনুযায়ী কাজ চলছে।
 
আগামী ২২ জুলাই ২৩ হাজার টনের তৃতীয় চালান আসবে বলেও জানান খাদ্যসচিব কায়কোবাদ হোসেন।
 
এদিকে আমদানি করা চাল নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান। সোমবার তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চালের বিষয়ে কথা বলবেন মন্ত্রী। আর কথা না বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করেই বিদায় নেন অতিরিক্ত সচিব।
 
এদিকে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. বদরুল হাসানকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
 
তবে অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বাংলানিউজকে বলেন, মূল জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। তখন অন্য জাহাজ দিয়ে অ্যাটেন্ড করতে হয়। লাইটার জাহাজ দিয়ে খালাস চলছে। একটা লাইটার জাহাজ কাজ শেষ করেছে, আরেকটি দিয়ে কাজ চলছে।
 
ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তারা শ্রমিক দিয়ে চাল নামিয়ে দেবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। বিলম্ব হলেও সমস্যা হবে না।
 
‘এমভি ভিসাদ’ এর এজেন্ট ইউনি শিপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, সরকার জরুরিভিত্তিতে চাল আমদানি করেছে। কিন্তু চাল খালাসের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে দ্রুততম সময়ে চাল গুদামে চলে যেতো।
 
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন ছাড়াও ভারত এবং থাইল্যান্ড থেকে আরও দেড় লাখ টন চাল আমদানির জন্য চুক্তি হয়েছে। এছাড়া আরও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এমআইএইচ/আরআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।