সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে নির্যাতিত গৃহবধূ কাজলী বেগম নয়জনকে অভিযুক্ত করে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এরপরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আটজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- ওই গ্রামের আহাদ আলী শেখের ছেলে আইয়ুব আলী (৫২), তার স্ত্রী মাহিরন নেছা (৪৫), ছেলে রাজু ওরফে উকিল (১৮), মো. আবুলের ছেলে বাচ্চু (৩৫), সেকেন্দার আলীর ছেলে হাসান (২০), নয়েশ আলীর ছেলে সাহেব আলী (২০), বাবুলের ছেলে সেতু (২০) ও কাজিরুলের ছেলে ফয়সাল (২০)।
স্থানীয়রা জানায়, গত বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলামের দু’টি হালের বলদ চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় সন্দেহ করা হয় একই গ্রামের তরল আলীকে। সন্দেহের বশে সিরাজুল ইসলামের স্বজনরা তরল আলীকে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রী কাজলী বেগমকে নির্যাতন শুরু করেন। এক পর্যায়ে আম গাছের সঙ্গে বেঁধে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। ভাংচুর করা হয় দরিদ্র ওই পরিবারটির বাড়িঘরও।
কাজলী বেগম জানান, গরু চুরির মিথ্যা অপবাদে গ্রামের সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে সেতু, ফয়সলসহ ১০ থেকে ১২ জন মিলে আমার উপর নির্যাতন শুরু করে। পরে একটি আম গাছের সঙ্গে বেঁধেও তারা মারধোর করে। এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারালে তার ক্ষান্ত হয়।
কাজলীর পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতনের পর তারা যেনো মামলা না করেন এজন্যও বারবার হুমকি দেয় ওই নির্যাতক পরিবার।
গ্রামের মোজাম মন্ডল জানান, প্রকাশ্যে একজন গৃহবধূকে নির্যাতন করা হলেও হামলাকারীদের ভয়ে কেউ টু শব্দটি করতে সাহস পায়নি। এমন নির্যাতনের পর ওই গৃহবধূকে তিন দিন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
রোববার রাতে ওই গৃহবধূর নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে।
সোমবার সকালেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল গোবিন্দহুদা গ্রাম পরিদর্শন করেন। এরপর পুলিশের আশ্বাস পেয়ে নির্যাতিত কাজলী দামুড়হুদা মডেল থানায় নয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন জানান, প্রকাশ্যে একজন নারীকে নির্যাতন আইনের চরম লঙ্ঘন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত নয়জনের মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এসএনএস