ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিশুশ্রম নিরসনে পরিকল্পনা ঘাটতিতে মন্ত্রণালয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
শিশুশ্রম নিরসনে পরিকল্পনা ঘাটতিতে মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক/ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বিগত বাজেটে শিশুশ্রম নিরসনে ১০০ কোটি টাকার বাজেট সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, এবার মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এনজিওর সমন্বয়ে ২০২১ সালকে টার্গেট করে কর্ম পরিকল্পনা করছি। আশা করি, আমরা সফল হবো।

সোমবার (১৭ জুলাই) ডেইলি স্টার ভবনে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ) আয়োজিত ‘এসডিজির আলোকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

২০২১ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসন হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ২২টি মন্ত্রণালয় ও এনজিওকে সম্পৃক্ত করে ন্যাশনাল মিটিং করেছি।

এ টার্গেট পূরণ করতে হলে ৫ থেকে ৭শ’ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। আমাদের সভানেত্রী এটা দেবেন।

এ সময় তিনি বলেন, ২০২১ সালকে টার্গেট করে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সার্ভে শুরু করেছে। শিশুরা কোথায়, কী কী এবং কোন কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে- তার একটি কাজ মন্ত্রণালয়ের ২ লাখ লোক ও এনজিওর মাধ্যমে করছি।  

এসডিজি অর্জন বড় কথা নয় জানিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে শিশুশ্রম আছে এবং তা বন্ধ করতে হবে। এটা করতে আমরা সক্ষম। আমরা শিশুশ্রম বন্ধে ন্যাশনাল কমিটির পাশাপাশি বিভাগীয় কমিটি করেছি। এছাড়া জেলা উপজেলা পর্যায়ে কমিটি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শ্রমবান্ধব ও মালিকবান্ধব শ্রম আইনের খসড়া প্রণয়নের জন্য ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান মুজিবুল হক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূইয়া বলেন,  টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যে ১৭টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, শিশুশ্রমকে ৮ নম্বর লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সবধরনের শিশুশ্রম বন্ধে  ২০২৫ সাল পর্যন্ত সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে প্রয়োজন সচেতনতার।  

বিএসএএফ-এর চেয়ারপার্সন মো. ইমরানুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ইসরাফিল আলম, সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী, সাংসদ শামছুল আলম দুদু, সাংসদ কবি কাজী রোজি, সাংসদ অ্যাড. হোসনে আরা, বিএসএএফ-এর পরিচালক আব্দুস শাহেদ মোহাম্মদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংগঠন তেরে দে হোমসের শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ এহসানুল হক প্রমুখ।  

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ এর জানুয়ারি থেকে মে এই সময়কালে ৬৫ শিশু গৃহকর্মীকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। একই সময় ২১ জন শিশু গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও ২১ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ৩০ জন শিশু গৃহকর্মী আত্মহত্যা করেছে। যা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে এসেছে।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে ৯০টি শিশুকে এবং ২০১৬ সালে ১০৬টি শিশুকে চুরির অপবাদে নির্মমভাবে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে যাদের অধিকাংশই দরিদ্র শ্রমজীবী শিশু।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।