ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্ড লাইসেন্স নিলেও শর্ত মানবে না বিমান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
বন্ড লাইসেন্স নিলেও শর্ত মানবে না বিমান বিমানের কার্গো কমপ্লেক্স

ঢাকা: দীর্ঘ ৩৩ বছর বন্ড লাইসেন্সবিহীনভাবে কার্গো হ্যান্ডলিং করে আসলেও গত বছর বিপাকে পড়ে ঢাকা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বন্ড লাইসেন্স নেয় বিমান কর্তৃপক্ষ। যার লাইসেন্স নাম্বার ১/২০১৬। বন্ড লাইসেন্স নেওয়ার সময় বিমানকে ব্যবসা করার জন্য কিছু শর্ত দেয় ঢাকা কাস্টমস। কিন্তু কাস্টমসের দেওয়া শর্ত মানা সম্ভব নয় জানিয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা যায়, বন্ড লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে গত কয়েক বছর ধরে ঢাকা কাস্টমস হাউস ও বাংলাদেশ বিমানের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। এছাড়া বিভিন্ন সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার প্রেক্ষিতে কাস্টমস আইন ও অন্যান্য সহযোগী আইন সমূহের আলোকে আমদানিকৃত ও রপ্তানির জন্য রাখা পণ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ, গুদামের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, গুদামে সিসিটিভি স্থাপন, গুদামের ভেতরে পণ্য সুশৃঙ্খলভাবে সংরক্ষণ, পণ্য চুরি হওয়া এবং বিনষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করা,পণ্য চুরি বা নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণ ও শুল্ককরাদি পরিশোধে বিমানকে দায়বদ্ধ করা, পণ্য সংরক্ষণের হিসাব যথাযথভাবে করা, অডিটের প্রয়োজনে কাস্টমকে পণ্য সরবরাহ, নিলামযোগ্য পণ্য ও সাধারণ পণ্য পৃথকভাবে সংরক্ষণসহ আরও কিছু শর্তাবলী দিয়ে বাংলাদেশ বিমানকে ব্যবসা করতে বন্ড লাইসেন্স দেয় ঢাকা কাস্টমস হাউস।

আরও জানা যায়, সারা বিশ্বে বন্ডেড ওয়্যারহাউস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এই শর্তগুলো বহুলভাবে প্রচলিত। সেই মোতাবেক কাস্টমস হাউস ঢাকা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় এনে বাংলাদেশ বিমানকে বন্ড লাইসেন্স দেয়। কেননা বন্ড লাইসেন্স ছাড়া বিশ্বে ওয়্যারহাউস ব্যবস্থাপনার নজির নেই। তারপরও দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে বাংলাদেশ বিমানের ওয়্যারহাউস (গুদাম) পরিচালনায় কোনো বন্ড লাইসেন্স ছিলো না। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে লাইসেন্স নিতে বাধ্য হলেও লাইসেন্সের শর্ত মানতে শুরু থেকেই আপত্তি করে আসছিলো।

সর্বশেষ চলতি মাসের ৬ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ.এম.মোসাদ্দিক আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বার্তায় ঢাকা কাস্টমস হাউসকে জানানো হয়, লাইসেন্স দেওয়ার সময় ঢাকা কাস্টমস হাউস যে শর্তের মাধ্যমে বিমানকে বন্ড লাইসেন্স দেয় সে শর্ত বিমানের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। কেননা কার্গো ওয়্যারহাউসটির সংস্কার এখন পর্যন্ত সম্পন্ন করেনি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। এতে অনেক মালামাল শেডের বাইরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পক্ষে শর্তগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে ‍না।     

বাংলাদেশ বিমানকে বন্ড লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার প্রকাশ দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, শুরু থেকেই ওয়্যারহাউস পরিচালনায় যে লাইসেন্স প্রয়োজন হয় সেটা ছিলো না বিমানের। সর্বশেষ গত বছরে বিমানকে বন্ড লাইসেন্স দেওয়া হয়। কাস্টমস আইন ও আন্তর্জাতিক রীতিরীতি অনুসরণ করেই তাদেরকে বন্ড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। বন্ডেড ওয়্যারহাউস পরিচালনা করতে হলে অবশ্যই কাস্টমসের শর্ত পালন করতে হবে। আর বিমান যদি কাস্টমসের শর্ত না মানে তাহলে বন্ড লাইসেন্স গ্রহণের বিষয়টি অহেতুক বলেই মনে করেন তিনি।

বন্ড লাইসেন্স নিলেও বাংলাদেশ বিমান কেন শর্ত মানবে না জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এ.এম.মোসাদ্দিক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন,আমরা এখনো সাংগঠনিক কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী হইনি। এছাড়া ওয়্যারহাউসটি এখনো পুরোপুরিভাবে সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। ফলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পণ্য দ্রব্যাদি চুরি হতে পারে। তাই কাস্টমসের দেওয়া শর্ত মানা সম্ভব নয়। তাহলে ওয়্যারহাউস থেকে পণ্য চুরি হলে সেটার দায়ভার কে নেবে জানতে চাইলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোনটি কেটে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ঘণ্টা, জুলাই ১৭,২০১৭
এসজে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।