ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গরমে ও রোগে ডাবেই আরাম,শান্তি-স্বস্তি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
গরমে ও রোগে ডাবেই আরাম,শান্তি-স্বস্তি! এই গরমে ডাবেই স্বস্তি

ঢাকাঃ রাজধানীতে কিছুদিনের টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার চরম ভোগান্তি গেছে মানুষের। এখন চলছে চরম তাপদাহের অস্বস্তিকর সময়। গত তিনদিন ধরে ঢাকার তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে।বলতে গেলে গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত মানুষের।

অতিরিক্ত গরমে ঘামের সাথে বেরিয়ে যায় প্রচুর পরিমাণ লবণ আর ভেঙ্গে যায় শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটগুলো। একারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে আর শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসে গলা।

সে কারণেই জমে উঠেছে ফুটপাতের বিভিন্ন পানিকেন্দ্রিক ব্যবসা।

গরমে রাস্তার পাশের এসব দোকানে সাধারণত বরফমিশ্রিত আখের রস, ঠান্ডা লেবু-শরবত আর ডাবের পর্যাপ্ত যোগান থাকে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ডাবের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।

লেবুপানি কিংবা আখের রসের ক্ষেত্রে ‘না’ শব্দটা উচ্চারণ করেন অনেকেই। কারণ বরফ কতোটা নিরাপদ সে নিয়ে সংশয় রয়েছে যথেষ্ট। কথিত আছে এখানকার বরফ মাছে ব্যবহৃত বরফ। কিংবা বরফ বানানোর জন্য ব্যবহৃত পানি বা লেবু-শরবতে ব্যবহৃত পানি আদৌ পানযোগ্য কিনা সে সম্বন্ধে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

তবে ডাব নিয়ে তো কারো মনে কোনো দ্বিধা-সংশয় নেই। এতে রোগের ঝুঁকি, ভেজালের ঝুঁকি বা সন্দেহ-সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। এর পুরোটাই প্রাকৃতিক আর খাঁটি আর তৃপ্তিদায়ী। ডাবের পানি পান করামাত্র স্বস্তির অনুভূতি জাগে দেহমনে।

এদিকে ঢাকায় চলমান চিকনগুনিয়া রোগের ক্ষেত্রে ডাবের মত উত্তম ও উপকারী পানীয় আর নেই। এসব কারণে ডাবের চাহিদার সাথে দামটাও বেড়ে চলছে দিন দিন।

বঙ্গভবনে কর্মরত আমিনুল ইসলাম ডাবের পানি পান করতে করতেই বলেন, পত্রিকায় টিভিতে অনেক নিউজ দেখছি এসব বরফের আর পানির উৎস নিয়ে। তাই নির্ভর করতে পারি না। এমনকি জন্ডিস হতে পারে এমনও দেখছি। কিন্তু ডাবের পানি খেলেই আরাম লাগে দাম যতই হোক না কেন।

রবিবার(১৬ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত এক মাস আগেও একটি ডাবের দাম ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। কোথাও কোথাও আবার ৮০ টাকায়  বিক্রি হচ্ছে এক একটি ডাব।

ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর বড়গুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এর মধ্যে সবচেয়ে শি ডাব বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে। পথচারীরা ছাড়াও চিকনগুনিয়া রোগীদের জন্য উত্তম এই পানীয়টি কিনছেন রোগীদের স্বজনেরা। তাই হাসপাতালের সামনে ডাবের দামটাও বেশ চড়া।

শাহবাগের দুটি বড় হাসপাতাল বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এদের সামনে ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করেন মোঃ বাবুল, মিজানুর রহমান ও সুমন।

বাংলানিউজকে তারা বললেন, বৃষ্টি হলে চাহিদা কমে যায়। গরমে চাহিদা বাড়ে। এখন আড়ৎদাররাই দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে আমাদের কাছে। ছোট ডাবগুলো আমরা ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় কিনি আর বড়গুলো ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। হাসপাতালের সামনে রোগীদের জন্য ডাবের পানি বোতলে ভরে নিয়ে যায় মানুষরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের ডাব বিক্রেতারাও জানান একই কথা। কিন্তু ধানমন্ডি, উত্তরা, মতিঝিল, গুলশান, বনানী এলাকার ডাব বিক্রেতারা জানান, কাস্টমার বুঝে দাম রাখি আমরা। যখন চাপ থাকে বেশি তখন দাম বেড়ে যায়। তাই একটি ডাবের দাম থাকে ৬০টাকা  থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত। আর সময়টা এখন নারিকেলের। তাই দেখা যায় অনেক ডাবে পানি থাকে না।

এ বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রিন্সিপাল নিউট্রিশন অফিসার খালেদা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটগুলোই আমাদের শক্তি সরবরাহ করে। গরমে ঘামের সাথে লবণ পানি বেরিয়ে যায় তখন ইলেক্ট্রোলাইটগুলো ভেঙ্গে যায়। তাই আমাদের দুর্বল লাগে। তখন ডাবের পানি, স্যালাইন সবচেয়ে দ্রুত এই ইলেক্ট্রোলাইটগুলো পুণর্গঠনে সহায়তা করে।

চিকনগুনিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, চিকনগুনিয়া রোগে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে ওই ইলেক্ট্রোলাইটের কারণেই। ডাবে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে, যা এ রোগের ক্ষেত্রে পরম উপকারী। তাই আমরাও লিকুইড ডায়েট হিসেবে বেশি পরিমাণ ডাব, ফলের রস, দুধ খেতে বলি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এমএএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।