ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভারতীয় ঢলে বাড়ছে সুরমা-কুশিয়ারায় পানি

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
ভারতীয় ঢলে বাড়ছে সুরমা-কুশিয়ারায় পানি ভারতীয় ঢলে বাড়ছে সুরমা-কুশিয়ারায় পানি

সিলেট: তাপমাত্রা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। বিভিন্ন পয়েন্টে সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রকৃতির এমন বৈরী অবস্থা অব্যাহত থাকলে বন্যা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারতের মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরাসহ কয়েকটি রাজ্যে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারায় পানি বেড়েছে, মনে করছেন আবহাওয়াবিদ ও পাউবো কর্মকর্তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও শনিবার (১৫ জুলাই) থেকে নতুন করে সুরমা-কুশিয়ারার পানি বেড়ে গেছে।

রোববার (১৬ জুলাই) সবকটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্যমতে, রোববার কানাইঘাটে সুরমার পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার, শেওলায় কুশিয়ারা বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার, আমলসীদের কুশিয়ারা বিপদসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার এবং শেরপুরে কুশিয়ারা বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নদীর পানি বাড়ার কারণে বন্যার পানি বাড়ছে। বিশেষ করে শনি ও রোববারে সুরমা কুশিয়ারার পানি আরো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ভারতের মণিপুর রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন বরাক নদী আসামের কাঁছাড় হয়ে জকিগঞ্জের আমলসীদের কাছে বরাক মোহনা সুরমা ও কুশিয়ারার উৎসমুখ। শুধু বরাক নয় এই দুই নদী দিয়ে আসাম ও মেঘালয়ের অন্য ছোট কয়েকটি নদীরও পানি প্রবাহিত হয়।
ভারতীয় ঢলে বাড়ছে সুরমা-কুশিয়ারায় পানি
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, সিলেটের আপার লেভেলে তথা আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে সুরমা-কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও সিলেটে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। শনিবার (১৫ জুলাই) তাপমাত্রা ছিলো ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং রোববার (১৬ জুলাই) ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রী। যা গত কয়েক মাসে সর্বাধিক। অথচ তাপমাত্রা বাড়লেও নদীর পানি কমেনি বরং বেড়েছে।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. জহির বিন আলম বাংলানিউজকে বলেন, গাছপালা, টিলা-পাহাড় ধ্বংস করায় প্রকৃতি আমাদের সঙ্গে বিদ্রোপ করছে। তাছাড়া উজানে বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সঙ্গে বন্যাও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। এ অবস্থায় নদী খননের বিকল্প নেই। মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়ে সুরমা-কুশিয়ারা নদী খনন করতে হবে।

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মাসখানেক ধরে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার নয়টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- সিলেটের বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ ওসমানীনগর ও মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ি, কুলাউড়া, ও রাজনগর।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এনইউ/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।