ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘নির্বাচনে জনগণ যাকে চায় তাকেই পাবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
‘নির্বাচনে জনগণ যাকে চায় তাকেই পাবে’ বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে জনগণ যাকে চায় তাকেই পাবে।

শনিবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটের মালিক জনগণ, তারা ভোট দেবে তাদের ইচ্ছামত।

যাকে তারা চায় তাকে তারা পাবে। ’
 
‘ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার তারা যেন পূরণ করতে পারে। তাই আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম, আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো। ’
 
স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকাসহ সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে আওয়ামী লীগের আন্দোলন ও কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অতীতে এই ভোটের বাক্স নিয়েও বিশাল খেলা ছিলো। ’
 
বিগত নির্বাচনের মতো দেশে যেন সহিংস পরিস্থিতি না হয় সেই কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
 
** আরও পড়ুন: নিরাপত্তা দিতে গিয়ে আমাকে জনবিচ্ছিন্ন করবেন না
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় চক্রান্তের শিকার হয়ে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে হারতে হয়েছে বলেও ফের অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।
 
তিনি বলেন, ‘গ্যাস উত্তেলনের জন্য আমেরিকান কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে। তাদের ইচ্ছা ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রি করবে। ভারত গ্যাস কিনতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমি মত দিই নাই। ’
 
‘কত গ্যাস আছে আমাকে জানতে হবে। দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে হবে। ৫০ বছরের রির্জাভ রাখতে হবে। তারপর যদি অতিরিক্ত থাকে তবেই আমি গ্যাস বিক্রি করবো, না হলে নয়। ’
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই গ্যাস আমি বিক্রি করতে পারি না। এটা জনগণের অধিকার। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন নিজেই আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। ঢাকায় এসেছিলেন। আমি তাকে একই জবাব দিয়েছিলাম। রাষ্ট্রীয় সফরে আমেরিকা গেলে একই প্রস্তাব দেওয়া হয়, সেখানেও আমি একই কথা বলেছি। ’

অষ্টম জাতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের বাসায় যুক্তরােষ্ট্রর সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান এবং বিএনপির পক্ষে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইয়াকে আমন্ত্রণের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘সেখানে আলোচনায় একই কথা উঠলে আমি নাকচ করে দিই। ’ 
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অতিথিরা।  ছবি: পিআইডিযুক্তরাষ্ট্রের তখনকার অনুরোধে সন্দেহ হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা একবার সার্ভে করায়, কিন্তু এরপর আর করেনি। আমি বারবার অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তারা করেনি বলে আমার একটু সন্দেহ হয়েছিল। তার মানে আমাদের দেশে কোনো গ্যাস নাই। তাহলে কেন বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, জাতির পিতার মেয়ে। যা বলবো এক কথাই বলবো। ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দিতে পারি না। আমি দেশ বেচার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই না। ’

পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ ও সম্প্রতি তা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলো আমার বিরুদ্ধে, আমার মন্ত্রিপরিষদের বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের বিরুদ্ধে। ’ 

‘চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম এখানে জনগণের সেবা করতে এসেছি, নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়। এটা একটা ষড়যন্ত্র ছিলো, চক্রান্ত ছিলো। তারা তা প্রমাণ করতে পারিনি। ’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি মেয়ে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম, নিজে দুই বার প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়ার ইচ্ছা থাকলে বহু আগেই করতে পারতাম। ’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা ভোগের জন্য নয়, ত্যাগের জন্য। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মহান অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন। ’
 
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএসএফ এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সফিকুর রহমান।
 
অনুষ্ঠান মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad