ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজশাহীর পদ্মা তীরেই বিনোদনের সব স্রোত!

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫০ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৭
রাজশাহীর পদ্মা তীরেই বিনোদনের সব স্রোত! রাজশাহীর পদ্মাতীরে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়/ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: চারদিকে সবুজ বেষ্টনী। আকাশে সাদা মেঘের ভেলা বারবার ঢেকে দিচ্ছে সূর্য। মরা নদীর পানিতে তখন রোদের ঝিলিক বন্ধ প্রায়। বালুচরে গরু নিয়ে চলছে রাখালের ছোটাছুটি। তার মধ্যদিয়ে বয়ে আসছে মৃদুমন্দ দক্ষিণা বাতাস।

তীরে বসে এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করতে কার না ভালো লাগে। তাইতো রাজশাহীর পদ্মার তীরে নেমেছে জনস্রোত।

ঈদের তৃতীয় দিন পদ্মাপাড় পরিণত হয়েছে বিনাদনপিপাসুদের মিলনমেলায়।

রাজশাহীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত স্রোতস্বিনী পদ্মা নদীতে এখন আর সেই মাতাল ঢেউ নেই। পাল তোলা নৌকা নেই। তবে আছে ডিঙি নৌকা। আছে মাঝিও। তাই মরা পদ্মাকে ঘিরেই তারুণ্যে লেগেছে ঢেউ। কংক্রিটে গড়া আধুনিক রাজশাহীর সব আনন্দই যেন এখন মিশেছে পদ্মা নদীর তীরে। প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা পদ্মার পাড় এখন সবার কাছে বিনোদনের সেরা ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাই প্রতিদিন দুপুর গড়ালেই সব বয়সী মানুষের ঢল নামছে রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে। পশ্চিমাকাশে সন্ধ্যা তারা জ্বলে না ওঠা পর্যন্ত সেখানে থাকছে কোলাহল। ইট-পাথরের নগরে সবুজের সান্নিধ্যে গিয়ে মনের সমস্ত ক্লান্তি যেনো কর্পূরের মতন উড়ে যাচ্ছে। ঈদের তৃতীয় দিনেও তাই ঠাঁই নেই শহরের দক্ষিণে থাকা পদ্মা নদীর মোহনায়।    

রাজশাহী মহানগরীর পঞ্চবটি আই বাঁধ থেকে শ্রীরামপুর টি-বাঁধ পর্যন্ত মানুষের জটলা। ঈদের তিনদিনের ছুটি শেষে কিছুটা হলেও কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে উত্তরের শহর। আর দক্ষিণে রয়েছে বিনোদনপিপাসুদের ভিড়। ঈদের ছুটি শেষে গতকাল বুধবার (২৮ জুন) অফিস-আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরপরও অনেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন আরও ২/৩ দিন পরে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার। তাই মহানগর জুড়ে এখন কেবলই ছুটির আমেজ।

রাজশাহীর পদ্মাতীরে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়/ছবি: বাংলানিউজরাজশাহীতে হাতেগোনা কয়েকটি বিনোদন স্পট থাকায় মানুষের পছন্দের তালিকায় সবার ওপরেই রয়েছে পদ্মাপাড়। ছোট-বড় সবার কাছেই সমান পছন্দ। আর বিনোদনপিপাসুদের ভিড়ে পদ্মা পাড়ের চটপটি থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোর ব্যবসাই এখন জমজমাট। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কেনাবেচা। নদীতে পানি আসায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কেউ কেউ নৌকা ভ্রমণে বের হয়ে পড়ছেন। আবার কেউ পাড়ে বসে বন্ধুদের নিয়ে ঈদ আড্ডায় মেতে উঠছেন।

রাজশাহীর শ্রীরামপুর টি-বাঁধ এলাকার চটপটি বিক্রি বিক্রেতা রাব্বানি জানান, ঈদের দিন বিকেল থেকে তিনি ব্যবসা শুরু করেছেন। ভিড় থাকায় প্রতিদিনই ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লাভ করছেন। মূলত ঈদের এই সময়টার জন্যই পদ্মা পাড়ের ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে থাকেন। এ সময়ের ব্যবসায় বেশি লাভ হয়।

মহানগরীর সুলতানাবাদ এলাকার ফাহিম, নাঈম, সাফাত নামের তিন তরুণ জানান, রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা আর শিশু পার্ক, ঈদ বিনোদনের দু’জায়গাতেই টিকেট কাটতে হয়। তারপরও আবদ্ধ পরিবেশ। তাই প্রকৃতির নির্মল বাতাস খেতে তারা পদ্মাপাড়ে চলে এসেছেন।

কিন্তু ঈদের জন্য অন্যতম এ বিনোদন স্পটেও যেনো তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এতে ভালোও লাগছে আবার অনেক মানুষের জন্য কষ্টও হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৭
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।