৫২ বছর বাদে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আড়াই কোটি মানুষের স্বপ্ন খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচলের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ আগস্ট।
প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ চলাচল করবে।
মে মাসের ২১ তারিখে কলকাতার কলকাতার ফেয়ারলি হাউসে দু’দেশের রেল মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তাদের তিনদিন বৈঠক শেষে এ দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান। ভারতের ১৫ সদসের নেতৃত্ব দেন ইস্টার্ন রেলের চিফ অপারেশন ম্যানেজার এ কে ভেরা, চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আর এল গুপ্তা, অর্থ বিভাগের শ্রীমতী কাকলী ঘোষাল, রেল বোর্ডের সুকান্ত বড়াল, শিয়ালদহ রেলের আর পাণ্ডে প্রমুখ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বুধবার (২৮ জুন) বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এর আগে উভয় দেশ চলতি বছরের পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) এবং পয়লা জুলাই থেকে দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস-২ যাতায়াতের আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।
রেলের ওই কর্মকর্তা বাংলানিউজকে আরও জানান, খুলনা-কলকাতা ১৮০ কিলোমিটার রেলপথের সম্ভাব্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে চেয়ারকোচ ৮ ডলার এবং কেবিন ১০ ডলার। মৈত্রী-১ এর মতো মৈত্রী-২-এর সবগুলো কোচই এসি। ঢাকা-কলকাতা ৫৮০ কিলোমিটার রেলপথ দূরত্বের হারেই খুলনা-কলকাতা ১৮০ রেলপথের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। চারটি চেয়ার কোচ এবং চারটি স্লিপার কোচের আসন সংখ্যা ৪১৮ জন। বাকি দু’টি ক্যানটিনসহ পাওয়ার কার।
যাত্রীদের কাস্টমস-ইমিগ্রেশন সারা হবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কলকাতায়। আর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কাস্টমস-ইমিগ্রেশন সারা হবে বেনাপোল সীমান্তে।
১০ বগির এ মৈত্রী ট্রেন সকাল ৭টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৭টা ৪০মিনিট) কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়বে। ট্রেনটি বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৯টায়। ইঞ্জিন বদল ও আনুষঙ্গিক কাজ শেষে খুলনায় গিয়ে পৌঁছাবে দুপুর ১২টায়। একই ট্রেন দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টায় কলকাতা পৌঁছাবে।
খুলনা-কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন ফের চালু উপলক্ষে ট্রায়াল হয় চলতি বছরের ৮ এপ্রিল। বাংলাদেশ রেলওয়ের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেনের নেতৃত্বে এদিন মৈত্রী-২ এ ছিলেন ৩৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে পৌঁছায় সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে।
এসময় নয়াদিল্লি সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সে যৌথভাবে পতাকা নেড়ে ট্রেনটির যাত্রা উদ্বোধন করেন। পরদিন (এপ্রিল ০৯) সকাল সোয়া আটটায় কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে মৈত্রী ট্রায়াল ট্রেনটি।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে খুলনা-কলকাতা রুটসহ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খুলনা-কলকাতা রেলের যাত্রীরা বরিশাল থেকেই স্টিমার ও রেলের টিকিট কেটে নিতে পারতেন। ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সারা হতো রেলের মধ্যেই। বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হতো না।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ বাড়তে থাকায় বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের বাসিন্দারাও গোয়ালন্দ-কলকাতা রেল পুনঃচালুর দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৭
এসএস/এএ