ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গতিতে গতিতে টক্কর!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২২ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
গতিতে গতিতে টক্কর! মহাসড়কে গতির টক্কর। ছবি ও ভিডিও: বাংলানিউজ

মহাসড়ক ঘুরে: বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল একটি পিকআপ ভ্যান। চালক ছিলেন বিমল কুমার। বনানীতে হাত তুলতেই গাড়ি থামালেন চালক। বললাম, সিরাজগঞ্জে যাবো ভাই, নেওয়া যাবে কি? হ্যাঁ সূচক জবাব পেয়ে পিকআপের সিটে চেপে বসলাম।

শোঁ শোঁ শব্দ তুলে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুট লাগালো পিকআপ। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের বিশাল বুক জুড়ে সৃষ্ট গর্তে চাকা পড়ে গাড়ি লাফিয়ে উঠছিল।

স্টিয়ারিং স্থির রাখতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন চালক।
 
ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ৯টা ছুঁই ছুঁই। মহাসড়কে তেমন একটা যানবাহনের দেখা মিলছিল না।
 
তবে সীমিত সংখ্যায় চলাচলকারী যানবাহনের গতি ছিল অত্যন্ত বেপরোয়া। কেউ কাউকে যেন পরোয়া করছিল না। যেনো প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে রেসে নেমেছে।
 
ঘড়ির কাঁটা তখন বেলা সাড়ে ১০টার ঘরে পৌঁছেছে। পৌঁছে গেলাম সিরাজগঞ্জের চৌরাস্তা গোল চত্বর এলাকায়। গোল চত্বর থেকে সোজা পূর্বে ঢাকা, পশ্চিমে নাটোর-রাজশাহী, দক্ষিণে নগরবাড়ি-পাবনা ও উত্তরে বগুড়া-রংপুর যাওয়ার মহাসড়ক চলে গেছে। এই গোল চত্বর ঘিরেও তেমন একটা গাড়ির চাপ চোখে পড়লো না।
 
অথচ ঈদের চাঁদ রাতেও চৌরাস্তা ঘিরে যানবাহন যেন উপচে পড়ছিল। ঘরমুখো মানুষকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব ও পশ্চিমপাড়ে ভয়াবহ যানজটে আটকা পড়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। মহাসড়কে খানাখন্দ।  ছবি: বাংলানিউজ
 
কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কের চিত্র পাল্টাতে থাকে। ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটগামী যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বেশ কয়েকটি বাসস্ট্যান্ডে যানজটও দেখা যায়। লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে দৌঁড়ে মহাসড়ক পারাপার করতে দেখা যায়।
 
এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের সেই গোল চত্বর, সাহেবগঞ্জ, ভুঁইয়াগাতি, ঘুড়কা বেলতলা, চান্দাইকোনা, ছোনকা, মির্জাপুর, ধুনটমোড়, শেরপুর বাসস্ট্যান্ড, কলেজরোড়, নয়মাইল, শাজাহানপুর বন্দর এলাকা, বনানী, তিনমাথা, চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা অন্যতম।
 
বুধবার (২৮ জুন) সরেজমিন দেখা যায়, ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষ নিয়ে যানবাহনগুলো বেপরোয়া ছুটছে। অনেক স্থানেই গা ঘেঁষে বাসগুলোকে ওভারটেকিং করতে দেখা গেলো। এ যেনো গতিতে গতিতে টক্কর।
 
এদিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের দীর্ঘ দূরুত্বের মাঝে কোথাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নেই বললেই চলে। কেবল সিরাজগঞ্জ চৌরাস্তা ও রায়গঞ্জ উপজেলার প্রায় মাঝামাঝি সাহেবগঞ্জ এলাকায় মহাসড়কের পূর্বপাশে একটি হাইওয়ে পুলিশের পিকআপ ভ্যান দেখা গেলো।
 
সেখানে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে মোটরসাইকেলের পেছনে ছুটতে দেখা যায়। তারা টাকা কামাই নিয়ে ব্যস্ত বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
 
আমির হোসেন, আবু রায়হান, আব্দুর রাজ্জাকসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, মহাসড়ক ফাঁকা পেলেই যানবাহনের চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বাঁক ও সৃষ্ট গর্তেও তাদের দৃষ্টি নেই। স্টিয়ারিং হাতে পেলেই তাদের মাথা যেন খারাপ হয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। বাড়ছে প্রাণহানি। আহত হয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গু হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
এমবিএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।