সঙ্গীরা দৌড়ে এসে যখন তাকে উদ্ধার করলেন ততক্ষণে তিনি জ্ঞান হারিয়েছেন। অবশেষে সবাই ধরাধরি করে নিয়ে গেলেন জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন ইনস্টিটিউটে (নিটোর)।
ট্রাকের ওপর মঞ্চ বানিয়ে বক্স লাগিয়ে গানের তালে তালে নাচতে নাচতে নরসিংদী থেকে ঢাকায় এসেছিলেন তানভীর ও তার সঙ্গীরা। বর্তমানে তার জ্ঞান ফিরলেও ভাঙা পা নিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে বিছানায় কাতরাচ্ছেন তানভীর।
তানভীরের মতোই রাস্তার উপর দাঁড়িয়েছিলেন আলম ও তার বন্ধুরা। হঠাৎ বেপরোয়া গতিতে একটি মটরসাইকেল সজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় তাকে। ধাক্কার ধকল নিতে না পেরে গড়াগড়ি খেয়ে স্থির হলো তার দেহ। সঙ্গীরা যখন উদ্ধার করলেন ততক্ষণে তার ডান পায়ের হাঁটু নিচে ভেঙে গেছে। গুরুতর আঘাত লেগেছে চোয়ালে। চিবুক ফেটে রক্ত বেরুচ্ছে। তারও জায়গা হলো পঙ্গু হাসপাতালে।
শুধু তানভীর বা আলম নয়, তাদের মতো দুর্ঘটনা কবলিত শতাধিক রোগীকে মঙ্গলবার (২৭ জুন) নিতে হয়েছে অপারেশনের টেবিলে। পঙ্গু হাসপাতালের ডাক্তারাও রয়েছেন ২৪ ঘণ্টা তৎপর। দিনে-রাতে চলছে অপারেশন। অনেকেই আবার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
নিটোরের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক অসীম ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, এ হাসপাতাল ৫শ’ শয্যার। তবে সব মিলিয়ে রোগী ভর্তি আছেন প্রায় দ্বিগুণ।
জরুরি বিভাগের টিকিট সরবরাহকারী নার্স বিউটি আক্তার রেজিস্ট্রার খাতা বের করে দেখান, সোমবার (২৬ জুন) ঈদুল ফিতরের দিন ১৩৫ জন টিকিট নিয়েছেন। আর মঙ্গলবার (২৭ জুন) টিকিট নিয়েছেন ৮১ জন রোগী।
তিনি বলেন, মারামারি করে আহত অবস্থায় কিছু রোগী এসেছেন। তবে বেশিরভাগ রোগীই এসেছেন বেপরোয়া গতিতে চলাচলকারী গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়ে। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকেও রেফার্ড করা হচ্ছে রোগী। সারা বছরই এমনটি হয়। যে কারণে নিটোর সব সময় জরুরি ভিত্তিতেই কাজ করে।
এই ঈদের ছুটিতেও সার্বক্ষণিক কাজ করছেন আটজন ডাক্তার। আর দুইজন সিনিয়র ডাক্তার সংযুক্ত রয়েছেন। মেজর অপারেশনের জন্য হাসপাতালে আসছেন তারাও।
ডা. অসীম ঘোষ বলেন, কেবল আজই ১শ’ রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। গতকালও অনেককে অপারেশনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭
ইইউডি/এমজেএফ