ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যেখানে ধনী-গরিব সমান

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭
যেখানে ধনী-গরিব সমান মানুষ মানুষকে সহায়তা করায় ধনী-গরিবের ব্যবধান ঘুচে যায় ঈদের দিনে। ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিয়ে হয়নি বেলিছা খাতুনের। বাবা মারা গেছেন অনেক আগেই। ঘরে মা-বোন ও ভাই থাকলেও অভাবের তাড়নায় নিজের খরচ নিজেকেই যোগাড় করতে হয়। এজন্য নিয়মিত অন্যের দ্বারে দ্বারে হাত পাততে হয়। মানুষও তাকে বঞ্চিত করেন না, সাধ্যমতো সবাই সহায়তা করেন।

ঈদ-উল ফিতরের দিনে সোমবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হতভাগ্য এই বেলিছা ভিক্ষা করছিলেন বগুড়ার একটি ঈদগাহ মাঠের প্রবেশপথের একপাশে। তার পাশে সামান্য কয়েকটি টাকার আশায় সারিবদ্ধভাবে বসেছিলেন শিশু-কিশোর-কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সী অভাবি ও দুস্থ অসহায় মানুষেরাও।

অসহায়-দরিদ্রদের সহায়তা করেছে ছোট শিশুরাও।  ছবি: আরিফ জাহাননতুন পোশাক, আতর-টুপি ও জায়নামাজ হাতে নিয়ে মুসুল্লিদের স্রোতও ছিল বিভিন্ন ঈদগাহ মাঠের দিকে। তাদের অনেকের সঙ্গে শিশু-কিশোর-কিশোরীদের দেখা যায়।

ঈদের জামাতে আসা মানুষজন দেখামাত্র সমাজের অসহায় হতদরিদ্র মানুষগুলো সাহায্যের আশায় দু’হাত উঁচিয়ে দেন।

মুসুল্লিদের অনেকেই সাধ্যমতো সারিবদ্ধভাবে বসে থাকা প্রত্যেকের হাতে টাকা দেন। বড়দের কাছ থেকে নিয়ে শিশু-কিশোরেরাও সাহায্য করেছে অসহায় মানুষগুলোকে।

এভাবেই ঈদগাহগুলোতে ধনী-গরিব ছিলেন সবাই সমান।
 
সহায়তা পেতে ঈদগাহের প্রবেশপথে বসেছিল তিন শিশু- কুকুলি, কোহলি ও আদিকা। তারা বাংলানিউজকে জানায়, তাদের বাবারা দিনমজুরের কাজ করেন। মায়েরা অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। যেদিন কাজ না পান, ঘরে খাবার থাকে না। ফলে সেদিন খেয়ে না খেয়ে কাটাতে হয়। এ কারণে তারা এখানে এসে সবার সঙ্গে লাইনে বসে পড়েছে। সবার মতো মানুষ তাদেরকেও টাকা দিয়েছেন।

ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম তার শিশু মেয়ে ও বড় ভাই ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে ঈদগাহে আসেন ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করতে।

ঈদগাহে সহায়তা পেয়েছে সব বয়সী নারী-পুরুষেরাই।  ছবি: আরিফ জাহানজহুরুল ও জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। দিনটিতে ধনী-গরিবের কোনো ব্যবধান নেই। তারাও সবার মতো রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ। আজকের মতোই প্রতিটি দিনই তাদের প্রতি সদয় হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭
এমবিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।