এমন অবস্থায় ঈদ মার্কেটে ক্রেতাদের কাছ থেকে নয়, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ হাতিয়ে নিচ্ছে হিজড়ারা।
বিপণী-বিতানগুলোর দুয়ারে দাঁড়িয়ে ‘ঈদ বকশিশ ১০০ টাকা’ হাঁক দিয়ে চাঁদা আদায় করছে।
আর এ সময়টাতেই ঘটছে বিপত্তি। হিজড়াদের গালাগাল সইতে না পেরে বাধ্য হয়েই তাদের দিতে হচ্ছে দাবি করা ‘ঈদ বকশিশ’।
ময়মনসিংহ নগরীর মফিজ উদ্দিন ইনডেক্স প্লাজা, গাঙ্গিনারপাড় এলাকার বারী প্লাজা, আক্তার ম্যানসন, সরকার ম্যানসন, স্টেশন রোডসহ সব ক’টি বিপণী বিতানে রোববার (২৫ জুন) মধ্যরাতেও হিজড়াদের অভিনব কায়দায় এমন চাঁদাবাজির দৃশ্য চোখে পড়ে।
মোহময় আলোর ঝলকানি আর অনাবিল আনন্দের মুখরতায় যাপিত ব্যস্ততার শেকল ছিঁড়ে চাঁদ রাতে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতেই ময়মনসিংহ নগরীর বিপণী-বিতানগুলোতেই ক্রেতারা ছুটছেন দলে দলে।
তাদের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কিন্তু হিজড়াদের বেলায় তারা কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ‘চাঁন রাতে’ দলে দলে ভাগ হয়ে ‘ঈদ কালেকশন’ করে যাচ্ছে হিজড়ারা। এতে বিরক্তি প্রকাশ করেন ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা।
নগরীর বিভিন্ন বিপণী-বিতানের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বছরের প্রায় সব সময়েই বিপণী-বিতানগুলোকে ঘিরে হিজড়াদের উৎপাত থাকে।
ওই সময়টাতে ৫ থেকে ১০ টাকা চাঁদা দিলেই তারা চলে যান। কিন্তু ঈদকে ঘিরে তাদের ভাষায় বকশিশের রেট বেড়েছে কয়েক গুণ।
কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে তারা বিপণী-বিতানগুলোর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তবেই সটকে পড়ছে।
নগরীর মফিজ উদ্দিন ইনডেক্স প্লাজার স্টিচ নামক একটি দোকানের ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, দলবেঁধে হিজড়ারা ব্যবসায়ীদের দুয়ারে হানা দিচ্ছে।
শূন্য হাতে তাদের বিদায় করা যাচ্ছে না। টাকা না দিলেই তারা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি শুরু করে। ফলে বাধ্য হয়েই তাদের টাকা দিতে হচ্ছে।
এ দোকানেই আলাপ হলো লাকী নামক এক হিজড়ার সঙ্গে। তার পাশেই তখন আরেক হিজড়া মোবাইলে কথা বলতে ব্যস্ত।
লাকীর বক্তব্য, হিজড়াদেরও ঈদ আছে। কেউ আমাদের আর্থিক সহায়তা দিতে চায় না। নতুন কাপড়ও দেয় না। কিন্তু আমাদেরও তো ঈদ আছে। তাই গ্রুপ করে বিপণী-বিতানের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বকশিশ নিচ্ছি।
মোবাইল রেখে পাশে দাঁড়ানো আরেক হিজড়া জানায়, আমরা ব্যবসায়ীদের বিরক্ত করছি না। সবাই খুশি মনেই আমাদের বকশিশ দিচ্ছে।
আমরা সমাজের উপকারে কাজ করি। ব্যবসায়ীদের টাকাতেই নতুন কাপড় কিনবো। আমরাও ঈদ করবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৭
এমএএএম/জেডএম