ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জ্যোতির্বিদ্যার বদৌলতে আগেই নিশ্চিত ঈদের দিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৭
জ্যোতির্বিদ্যার বদৌলতে আগেই নিশ্চিত ঈদের দিন ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: রোজা এবার ২৯টি। তাই সোমবারই (২৬ জুন) ঈদ। কারণ জ্যোর্তিবিদ্যার হিসেবে, শনিবারই (২৪ জুন) নতুন চাঁদের জন্ম হয়ে গেছে। কিন্তু সদ্য জন্ম নেওয়া চাঁদের আলোকিত অংশ এতো কম যে তা খালি চোখে সেটা দেখা যায়নি। কিন্তু রোববার (২৫ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ২১ মিনিটে আলোকিত অংশ বেড়ে যাবে। তাই ঈদের বারতা নিয়ে খালি চোখেই ধরা দেবে শাওয়ালের চাঁদ। ঈদুল ফিতর তো এই শাওয়াল মাসেরই পহেলা তারিখে হয়।

কিন্তু জ্যোতির্বিদ্যার এই হিসেবে তো আর মুসলিম উৎসব, রীতি ও চর্চা চলবে না। ঈদ, রোজা নির্ধারিত হবে ইসলাম ধর্মের বিধান মেনে।

রোববার সন্ধ্যায় তাই বেঠক বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির। চাঁদ দেখা গেলো কি গেলো না তা নিশ্চিত করবে ওই কমিটিই।

বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে রোজা ‍আর ঈদের এটাই রেওয়াজ, এটাই ইতিহাস। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসেব যাই হোক, ঈদ নিশ্চিত হবে প্রচলিত ইতিহাসে। এ কারণেই তো সৌদি আরব আর আরব আমিরাতে রোববার ঈদ হলেও পাশের দেশ ওমানে ঈদ হচ্ছে না খালি চোখে চাঁদ দেখা না যাওয়ায়।
তবে এ হিসেবের বাইরে গিয়েও কোথাও কোথাও ঈদ উদযাপনের চল আছে। যেমন ধর্ম নিরপেক্ষ তুরস্কে ঈদ হয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কষা হিসেবেই। আবার বাংলাদেশের বেশ কিছু স্থানে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন হচ্ছে রোববারই।

তবে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি কিন্তু আগেই বলে দিয়েছিলো যে, এবারের ঈদুল ফিতর জুনের ২৬ তারিখেই হবে। রোজা হবে ২৯টি। শুধু তাই নয়, মহাজাগতিক হিসেবে কষে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ঈদ এবং রোজার শুরু ও শেষ হওয়ার তারিখ এখনই জেনে রেখেছেন তারা।

শুধু রমজান ও ঈদ নয়, কোন দিন চন্দ্র গ্রহণ আর কোন দিন সুর্যগ্রহণ সবই তারা বের করেছেন নিখুঁত হিসেব কষে। এতো দিন এ হিসেবে কোনো ভুল ধরা পড়েনি কখনোই।

কিন্তু রোজা ২৯ নাকি ৩০টা হবে তা আগেভাগে জেনে গেলে চাঁদ দেখার আর আনন্দ কোথায়?

উপরন্তু হিসেব যতোই নিশ্চিত হোক না কেনো, ইসলামি নিয়মের সঙ্গে তো আর আড়ি দেওয়া  যাবে না। অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি তাই রোববার চাঁদ দেখা যাওয়ার ব্যাপারে ‘নিশ্চিত’ শব্দটা ব্যবহার না করে ‘সম্ভাবনা’ শব্দটির প্রয়োগ করেছে। হয়তো তারাও চাইছে, রোববার উনত্রিশতম রোজার সন্ধ্যায় সবাই নিজ চোখেই চাঁদ দেখে ঈদ আনন্দ উপভোগ করুক।

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করেই বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ হচ্ছে। বিশ্বের তাবৎ মুসলিম ইসলামিক চন্দ্র বর্ষপঞ্জী মেনেই এসব ঈদের দিন নির্ধারণ করছেন। রমজান হলো এই চন্দ্র বর্ষপঞ্জীর নবম মাস।

এক বছরে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের তুলনায় ১১ দিন এগিয়ে থাকে ‍চান্দ্র বর্ষ। এর ফলে বছর ভরই ঘুরতে থাকে রমজানের সময়। প্রতি ৩৩ বছরে ঠিক শুরুর স্থানেই ফিরে আসে চান্দ্রমাস।

এ কারণেই পৃথিবীর কোনো অংশের মানুষকে যেমন প্রতিবছর বড় দিনের রমজানে রোজা ‍রাখতে হয় না, তেমনি কোনো এলাকার মানুষ কেবল ছোট দিনের রমজানও পান না।

এই চন্দ্র বর্ষই পৃথিবীর সব মুসলমানকে বিভিন্ন মৌসুমে রোজা রাখার সুযোগ করে দেয়।

আর অনেকে দেশ চান্দ্র মাসের পঞ্জি আগেই নির্ধারণ করে ফেরায় ঈদের তারিখও নির্ধারণ হয়ে যায় আগেই। আবার বাংলাদেশের মতো অনেক দেশেই ঈদ হয় আকাশে চাঁদ দেখার পর।

তবে জ্যোতির্বিদ্যার হিসেব মানুষকে ঈদের নির্দিষ্ট দিন সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করে বৈকি। তাই ঘোষণা না হলেও, ঈদ ঠিক কবে হচ্ছে তা জেনে নেওয়া যায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বদৌলতেই।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।