ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কীর্তনখোলা-১ লঞ্চের ধাক্কায় পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত  

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
কীর্তনখোলা-১ লঞ্চের ধাক্কায় পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত   কীর্তনখোলা লঞ্চের ডেক

বরিশাল: ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ কীর্তনখোলা-১ এর ধাক্কায় বরিশাল নদী বন্দরের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকজন যাত্রী নদীতেও পড়ে যান। এ ঘটনায় উত্তেজিত যাত্রীরা লঞ্চে ভাংচুর চালিয়েছে। এতে লঞ্চের ৩ স্টাফসহ কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটার পর লঞ্চের মাস্টার আব্দুস সালামকে আটক করে পুলিশ। একই সাথে লঞ্চটির যাত্রা বাতিল করে সেটিকে আটক রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।

লঞ্চের সুপারভাইজার বাবুল জানান, ঢাকা থেকে শনিবার দুপুরে লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া পয়েন্ট অতিক্রম কালে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে লঞ্চটি তীরে আটকে যায়।

এ সময় কিছু যাত্রী হঠাৎ করেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। লঞ্চের স্টাফরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে উত্তেজিত যাত্রীরা তাকেসহ লঞ্চের স্টাফ রানা, রমজান, ইমামসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করে। এ সময় তারা লঞ্চের নিচতলার ডেকের ২টি টেলিভিশন, কেবিনের ও প্রবেশদ্বারের দরজা, সার্চ লাইট, মাস্টার ব্রিজের জানালা ভাংচুর করে।

তিনি বলেন, ঘাটে এসে ভাংচুর চালানো যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে পুলিশ সদস্যদের দেখিয়ে দেয়া হলেও তাদের আটক করা হয়নি।

তবে লঞ্চে হাজারের ওপরে যাত্রী থাকলেও এর নিশ্চিত পরিসংখ্যান জানাতে পারেনি কেউ।

এদিকে লঞ্চের যাত্রী ঝালকাঠির বাসিন্দা রুহুল আমিনসহ একাধিক যাত্রীরা জানিয়েছে, লঞ্চটি বরিশাল ঘাটে আসা মাত্রই এর কর্তৃপক্ষের লোকজন যাত্রীদের উপর চড়াও হয়।

তারা আরো জানান, ঢাকার ঘাট থেকেই লঞ্চটির স্টাফরা যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করছিলো। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে লঞ্চটি যাত্রা শুরু করে। পথিমধ্যে বরিশালের চরবাড়িয়া পয়েন্টে যখন লঞ্চটি ডুবোচরে আটকা পড়ে তখন যাত্রীদের সান্ত্বনা না দিয়ে উল্টো তাদের সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এতে যাত্রীরা উত্তেজিত হয়, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে যাত্রীদের ভাংচুরের মধ্য দিয়ে।

বরিশাল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কীর্তনখোলা-১ লঞ্চটি সজোরে বরিশাল নদী বন্দরের পন্টুনে ধাক্কা দেয়। এতে পন্টুনের সামনের ও পেছনের অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি লঞ্চের ভেতরে থাকা কয়েকজন যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। নৌ-পুলিশ পরে তাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন ও বেপরোয়াভাবে লঞ্চ পরিচালনার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে মনে করেন তিনি।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লঞ্চটির ধাক্কায় পল্টুনের পেছনের অংশে থাকা একটি স্পার্ট র‌্যাম্প ভেঙে গেছে ও অপর একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও পন্টুনের সামনের অংশসহ বেশ কয়েকটি স্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরীক্ষা করা হয়নি।

তিনি বলেন, বেপরোয়াভাবে লঞ্চ চালানোয় লঞ্চের মাস্টার আব্দুস সালামকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লঞ্চের যাত্রা বাতিল করে সেটিকে বরিশাল নদী বন্দরে আটক রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে মেরিন আদালতে মামলা দায়েরসহ ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০২১২ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৭
এমএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad