তারা আপনজনের শত আবদারের পরেও তাদের কাছে গিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবেন না। বরং যারা শহর ছেড়ে যাচ্ছেন তাদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করা কিংবা ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই ঈদ কাটবে তাদের।
ঈদ উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজধানীজুড়ে নিয়োজিত রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যাদের বেশির ভাগেরই ঈদ কাটবে এসব দায়িত্ব পালন করে।
মহাখালী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মাহবুবুল ইসলামের ছুটি হয়নি এই ঈদে। তাই এবার যাওয়া হচ্ছে না নিজ বাড়ি সিরাজগঞ্জে।
আত্মীয়-স্বজনদের ছেড়ে ঈদ করার প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যারা ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছে তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার মধ্যেও একটা আনন্দ আছে। তাছাড়া আমাদের সবাই সব ঈদে ছুটি পায় না। সবাই ছুটিতে গেলে দায়িত্ব পালন করবে কে?
রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় পুলিশের টহল টিমে দায়িত্ব পালন করছেন এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এসআই বলেন, বাড়িতে মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা রয়েছে। ঈদের সময় তাদের ছেড়ে এভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে মন একটু খারাপ হবেই। দিশেহারা হয়ে মানুষ কীভাবে বাড়ির দিকে ছুটছে সেসবই দেখছি।
তিনি বলেন, আমরা সবাই ঈদ করলে মানুষজন কীভাবে ঈদ করবে? আমরা আছি বলেইতো সবাই সবকিছু ফেলে রেখে বাড়ি চলে যেতে পেরেছে নিশ্চিন্তে। আমি অন্য কাউকে ঈদ করার সুযোগ করে দিতে পারছি, এটা ভাবলে আর খারাপ লাগে না।
ঈদ নিয়ে তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান নিউমার্কেট এলাকায় দায়িত্বরত আনসার সদস্য জহির। ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি।
কাজ করতে করতেই তিনি বলেন, বাড়ি যেতে পারছি না। সবাইকে ছেড়ে একলা একলা কি ঈদ হয়? ঈদের দিনও ডিউটি করব, ডিউটি শেষে বাসায় যাব। আর তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই।
আমার দায়িত্ব পালনের কারণে আরেকজন ঈদ উদযাপন করতে পারছে, এটাই বা কম কিসে?, যোগ করেন তিনি।
তারই আরেক সহকর্মী খালেদ বলেন, কতো মানুষ আসছে কেনাকাটা করতে। আর একদিন পর সব ফাঁকা হয়ে যাবে কিন্তু মার্কেট তো থাকবে। নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের উপরই। আমরা সবাই ছুটিতে গেলে কীভাবে হবে!
সহকর্মীদের মধ্যে যারা এই ঈদে বাড়ি গেছেন তারা ভালোভাবে ঈদ পালন করুক। সামনের ঈদে তারা সুযোগ পাবেন বলে প্রত্যাশা খালেদের।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
পিএম/এসএনএস