ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নির্দেশ অমান্য করে ট্রাকে যাত্রী বোঝাই!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
নির্দেশ অমান্য করে ট্রাকে যাত্রী বোঝাই! ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে উঠছেন এক নারী। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ঝুঁকিপূর্ণভাবে কোনো যানবাহনের ছাদে যাত্রী না তোলার নির্দেশনা দিলেও ‍তা মানা হচ্ছে না। গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকেই যাত্রী বোঝাই করে ট্রাকের পর ট্রাক ছেড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।

শনিবার (২৪ জুন) ভোরে রংপুরের পীরগঞ্জে ট্রাক উল্টে ১৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর গাবতলী এলাকা পরিদর্শনকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘরমুখো মানুষকে বাস-ট্রাক বা অন্য কোনো যানবাহনের ছাদে না নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

কিন্তু বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ট্রাফিক সার্জেন্ট ও পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে ট্রাকে যাত্রী বোঝাই করা হচ্ছে।

এর মধ্যে বাদ যাচ্ছে না নারী ও শিশুও।  

গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের ওপারে আমিন বাজার ব্রিজের ওপর থেকে ট্রাকে যাত্রী বোঝাইয়ের ঘটনা বেশি হচ্ছে। গাবতলী পশুর হাটে যেসব ট্রাক দিয়ে গরু-মহিষ আনা হতো, সেসব ট্রাকে এখন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু পরিবহন চালক।  

আমিন বাজার ব্রিজের ওপর দু’জন সার্জেন্ট দাঁড়িয়ে থাকলেও এসব ঘটনায় তাদের ভ্রুক্ষেপ করতে দেখা গেল না।

বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী ট্রাক চালকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা বলেন, সবাই ঈদের সময় ট্রাকে-বাসের ছাদে যাত্রী পারাপার করে। তাহলে আমরা নিলে সমস্যা কী?

মন্ত্রীর নির্দেশ এবং রংপুরের দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করলে ট্রাক চালক জাহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এ সময় অনেক কিছু ঘটে এবং তাতে কিছু যায় আসে না। আমরা যাত্রীদের অল্প টাকায় নিয়ে যাই, তাই স্বল্প আয়ের মানুষ ওঠে। ঈদ শেষ হলে এসব কথাও হবে না, আর আমরাও যাত্রী নেবো না।  

ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে একদল ঘরমুখো যাত্রী।  ছবি: জিএম মুজিবুরপরিবহন মালিকদের অনুমতি নিয়েই তারা যাত্রী তুলছেন বলে জানান জাহিদুর।

নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ এবং কুষ্টিয়ায় যাত্রীদেরই বেশি ট্রাকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চড়ে গন্তব্যে রওয়ানা হতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঝুঁকি বা জীবনের মূল্য থেকে ২০০-৩০০ টাকা বাঁচানোই তাদের কাছে প্রাধান্য বেশি পাচ্ছে। সাধারণত এসব এলাকায় যে কোনো পরিবহনের বাসে গেলে ৫০০-৬০০ টাকা ভাড়া লাগে। কিন্তু এখন লাগছে ২০০-৩০০ টাকা।

মো. শরিফ মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে নাটোরের উদ্দেশে ট্রাকে চড়ে রওনা দিয়েছেন। এমন ঝুঁকিপূর্ণভাবে স্ত্রীকে নিয়ে কেন রওনা দিয়েছেন—প্রশ্ন করলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাস ভাড়া বেশি, তাই ট্রাকে করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। এছাড়া বাসের সিট পাওয়া যায় না এবং দেরিতে রওনা দেয়, তাই ট্রাকে যাচ্ছি।

রংপুরের দুর্ঘটনা ও মন্ত্রীর নির্দেশ সম্পর্কে জানেন কিনা প্রশ্ন করা হলে শরিফ মিয়া বলেন, আল্লাহর ভরসায় যাচ্ছি,  কোনো দুর্ঘটনা হলে আর কী করার আছে। আর ঈদের সময় সবাই যায় বলে আমিও যাচ্ছি।

বাসের কয়েকজন যাত্রী ও গাবতলীর স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি ঈদের সময়ই এক শ্রেণীর অসাধু ট্রাক চালক এভাবে যাত্রী টানেন।  

যাত্রীদের দাবি, এসব ঘটনা প্রশাসনের সামনেই ঘটছে। তাদের আরও কঠোর হওয়া উচিত। আবার অনেক সময় দেখা যায় টাকা নিয়ে পুলিশ এসব ট্রাক চালকদের ছেড়ে দেয়। এসবেরও লাগাম টানা উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এমএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।