ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদ আনন্দ নেই কুমিল্লার ভাসমান মানুষের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
ঈদ আনন্দ নেই কুমিল্লার ভাসমান মানুষের ঈদ আনন্দ নেই পথশিশুদের-ছবি-বাংলানিউজ

কুমিল্লা: প্রতিবছর ঈদ আসে হাসি, আনন্দ আর ভালবাসা নিয়ে। তবে এ আনন্দ আর ভালবাসা চক্রাকারে ঘোরে একটি বিশেষ শ্রেণির মধ্যে। ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয় পথশিশু, টোকাই, ভবঘুরে আর ভাসমান মানুষ। তাদের জীবনে ঈদের আনন্দ একটি সোনালি স্বপ্ন। সমাজের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ঈদের যে ব্যাপক প্রস্তুতি দেখা যায় তার বিন্দুমাত্রও স্পর্শ করে না তাদের। 

কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা, মহাসড়কের পাশে, রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডের পাশে বসবাস করে বিশাল এ ভাসমান শ্রেণি।  

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লা শাসনগাছা রেলস্টেশনের প্লাটফর্ম, লাকসাম রেলস্টেশন, কান্দিরপাড়ের ট্রাফিক মোড়, টাউন হল, কুমিল্লা পার্ক, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পথচারী শিশু ও ভাসমান মানুষ জীবনযাপন করছে।

যাদের জীবনে ঈদ মানেই দুঃস্বপ্ন।  

কুমিল্লা টাউন হলে আলাউদ্দিন (৬) নামের এক পথশিশু জানায়, আমরা রাস্তায় থাকি, তাই সবাই আমাদের ঘৃণা করে, কেউ আমাদের সাহায্য করে না। আমি আর আমার বোন ভিক্ষা করে টাকা জমা করেছি ঈদের পোশাক কেনার জন্য। খুব কম সময়ই আমাদের দিনে একবেলা খাবার জোটে। টাউন হলের মুক্তমঞ্চে গাদাগাদি করে রাতযাপন করে তারা। ঈদ তাদের জীবনে খুশির বার্তা বয়ে আনে না।

কুমিল্লা রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে আরিফ নামের আর এক শিশু জানায়, আমরা ৭ বন্ধু প্রতি রাতে এখানে ঘুমাই। ঈদে যখন অন্য শিশুরা নতুন পোশাক পরে তখন আমরা পুরাতন জামা পড়ি। মানুষজন আমাদেরকে টোকাই বলে, চোর বলে। আমাদের খুব খারাপ লাগে।  

ঈদ আনন্দ নেই ভিক্ষুকদের-ছবি-বাংলানিউজসদর দক্ষিণে রাস্তার পাশে বসবাস করে ১৮টি মুসলিম পরিবার। যারা জানে না ঈদ কখন আসে, আর কখন যায়। সেখানে প্রায় ৫৪ জন মানুষ তাবু টাঙিয়ে বাস করে। সেখানে বসবাসকারী জামালের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এবারের বেশিরভাগ রোজাই পানি খেয়ে রেখেছি। ইফতারের সময় ৫ টাকার মুড়ি ৬ জনে মিলে ভাগ করে খাই। অনেক সময় তাও মেলে না। ঈদের দিন সকালে মসজিদের সামনে গিয়ে দাঁড়াবো। দেখি কত টাকা পাই। তারপর সেই টাকা দিয়ে চাল কিনবো। ঈদ কি আমাদের সন্তানেরা টেরই পায় না। জামালের মতো একই অবস্থা কুমিল্লার হাজার হাজার পথশিশু, ভাসমান ও ভিক্ষুক শ্রেণির।

কিছু কিছু সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈদের আগে পোশাক, খাবার সরবরাহ করলেও তা খুবই অপ্রতুল।  

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন কমিশনের নির্বাহী সদস্য ইয়াসমিন রীমা জানান, সমাজের বিত্তবানদের এসব সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে এগিয়ে আসা উচিৎ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
আরআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।