ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গায়ের জোরে ঈদ বকশিস গণপরিবহনে

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
গায়ের জোরে ঈদ বকশিস গণপরিবহনে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসে বকশিস আদায় নিয়ে যাত্রীর সঙ্গে হেলপারের বাহাস। ছবি: মানুসরা চামেলী

ঢাকা: রোববার (২৫ জুন) চাঁদ দেখা গেলে সোমবার (২৬ জুন) নতুবা মঙ্গলবার (২৭ জুন) ঈদ। গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গত বুধ-বৃহস্পতিবার (২১ ও ২২ জুন) থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। এতে যানজট আর মানুষজটের রাজধানী ধীরে ধীরে ফাঁকা নগরীতে পরিণত হচ্ছে।

নগরীতে যাত্রী সংখ্যার সাথে সাথে কমে আসছে পরিবহনের সংখ্যাও। আর সে সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে ‘ঈদের বকশিসের’ নামে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে পরিবহনগুলো।

কেউ কেউ ডাবল ভাড়াও চেয়ে বসছে। আর যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি নিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৫/৭ টাকা। অনায়াসেই হেলপার কিংবা কন্ডাকটর বলে দিচ্ছে এটা বকশিস।
 
শনিবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বেশ কয়েকটি পরিবহনে চেপে দেখা যায়, অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী পরিবহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে অনেকটা জোর করে বকশিস আদায় করছে। কেউ না দিতে চাইলে বাকবিতণ্ডায়ও জড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে উদ্ধ্যত আচরণও করতে দেখা যায় হেলপার-কন্ডাক্টরদের।  
 
যাত্রীরা বলছেন, পরিবহনগুলো কাছাকাছি গন্তব্যের যাত্রী উঠতে দিচ্ছে না। মিরপুর ১০ থেকে সদরঘাট রুটের বাসগুলো ফার্মগেট-গুলিস্তানের যাত্রী ওঠালেও ভাড়া রাখছে সদরঘাটের। কারো কারো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি।  
 
মিরপুর ১০ নম্বর থেকে বাড্ডা পর্যন্ত চলে আকিক, জাবালে নূরসহ কয়েকটি পরিবহন। তাদের নিয়মিত ভাড়া ২৫ টাকা। শনিবার এ পরিবহনগুলোতে দেখা যায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।  

মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে গাবতলী রুটের মিনিবাসগুলো যাত্রীপ্রতি ১৫ টাকা ভাড়া। মিরপুর ১ পর্যন্ত তারা ভাড়া নেয় ১০ টাকা। কিন্তু শনিবার দেখা গেল তারা ১৫ টাকা ঈদ বকশিস দাবি করে ৩০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। মিরপুর ১ এর যাত্রীদের গাড়িতেই নিচ্ছে না।
 
রাজধানীতে চলাচলকারী লেগুনা বা হিউম্যান হলারগুলোতেও বকশিসের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় চলছে। প্রতি রুটে ৫-১০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে।
 
মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে গাবতলী যাবেন আনিসুর রহমান। কম টাকা লাগবে বলে সিএনজি না নিয়ে ফার্স্ট লুক নামে একটি পরিবহনে উঠেছেন। কন্ডাক্টর ভাড়া নিতে এলে আনিসুর চারজনের ভাড়া হিসাব করে তাকে নির্ধারিত ৬০ টাকা দেন। কিন্তু কন্ডাক্টর ১২০ টাকা দাবি করেন। বহু তর্ক-বিতর্কের পর আনিসুরের কাছ থেকে ৫০ টাকা বেশি নিয়েই ছাড়েন তিনি।
 
আবেদিন নামে জাবালে নূর পরিবহনের এক যাত্রী বাংলানিউজকে বলেন, বকশিস দেবো কি না দেবো আমার ব্যাপার। জোর করে বকশিস আদায় জীবনে দেখিনি। তাছাড়া ঈদের আরও দু’তিন দিন বাকি। এখনই তারা বকশিস আদায় করছে। পারলে গালিগালাজ করে বকশিস নেয়।

ঈদের বকশিস হয় একদিন। ছুটির সময় আমাকে প্রতিদিন মিরপুর থেকে বাড্ডা যাতায়াত করতে হবে। এখন প্রতিদিন বকশিস দেবো? এটা কেমন কথা!, বলেন ওই যাত্রী।  
 
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের কন্ডাক্টর হেলাল বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগে চার-পাঁচদিন যাত্রীর কাছ থেকে বকশিস নেওয়া হয়। প্রতি ঈদে বকশিস নেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় তো গাড়ি নেই, সব গাড়ি দূরের যাত্রায় চলে গেছে। এখন ঈদের সময় একটু বেশি ভাড়া নিলে কোনো ক্ষতি নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এমসি/এইচএ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।