ঈদের সময় বেতন বোনাস পেতে দেরি হওয়ায় ঈদের আনন্দ পরিবারের সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন সপরিবারে। কিন্তু বাসের সিটে নয় বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাটোর যাচ্ছেন বাসের ছাদেই।
শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে দিবা নিশি পরিবহনের ছাদের উপর আলাপকালে তিনি একথা জানান।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বপরিবারে কেন বাসের ছাদে যাচ্ছেন এমন প্রশ্ন করা হলে সালাম শেখ বলেন, ঈদের আগে নাটোরের ভাড়া ৩৫০ টাকা। কিন্তু এখন ৭শ টাকা। আর ছাদের ভাড়া এখন ২৫০ টাকা। গরীব মানুষ। রাজধানীর একটি জুট মিলে কাজ করি। যে বেতন ভাতা পাই তাই দিয়েই কোনোমতে পরিবার চলে যায়। ছোট্ট একটি মেয়ে আছে। তাকেও পড়ালেখা করাতে হয়। এতোটাকা দিয়ে কিভাবে পরিবারসহ সিটে যাব আরাম করে। বরং ছাদে যাচ্ছি এটাই তো বড় আরাম।
সালাম শেখের স্ত্রী হুমায়রা বেগম বলেন, অনেক দিন পরে গ্রামে যাচ্ছি। সবার জন্য কিছু কিছু কেনাকাটা করতে হয়েছে। এখন যদি আবার ছিটে বসে যাই তাহলে এতো টাকা কোথায় পাব। তবে এভাবে গাড়ির ছাদে এবারই তিনি প্রথম যাচ্ছেন। তাই কষ্ট নয় বরং ছিটে বসে যাওয়ার চেয়ে আরও ভালোভাবে পৌঁছাতে পারবেন বলে তিনি জানান।
আগে কখনো বাসের ছাদে নাটোর গিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সালাম শেখের বোন সালমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, না আমি যায়নি। তবে ৭শ টাকা দিয়ে যাওয়াও তো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। জুট মিলে কাজ করি। বেতন পাই ৫ হাজার টাকা। পরিবার আছে, সন্তান আছে কিভাবে যে বেঁচে আছি? তার চেয়ে একটু ঝুঁকি থাকলেও কম টাকায় তো যেতে পারছি। কিন্তু এটাও বড় কথা নয়, সবার সঙ্গে ঈদ করতে পারব এটাকেই বড় করে দেখছেন তিনি।
এদিকে সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গাবতলী পরিদর্শনকালে মালিকপক্ষকে বলেন, ঈদের সময় বাসের ছাদে কোনো যাত্রী নেওয়া যাবে না। গাড়ি দ্রুত গতিতে চললে অনেক সময় ছাদে যারা থাকেন তাদের বিপদ হতে পারে। কিন্তু বাস মালিকপক্ষ মন্ত্রীর একথার কোনো পাত্তায় দিচ্ছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এসজে/এসএইচ