ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মিডিয়ার লোক আছে, ভাই এইবার লঞ্চ ছাড়েন!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
মিডিয়ার লোক আছে, ভাই এইবার লঞ্চ ছাড়েন! সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড়/ছবি: সুমন

ঢাকা: ভাই এইবার ছাড়েন। আর কতো? আশে-পাশে মিডিয়ার লোক আছে ঝামেলা হয়ে যাবে। শনিবার (২৪ জুন) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-বরিশাল রুটের পারাবত-৮ লঞ্চের ম্যানেজার সুমন খানের কাছে এভাবে মিডিয়ার দোহাই দিচ্ছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টহলরত কর্মকর্তা।
 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারাবত-৮ লঞ্চটি সদরঘাট টার্মিনাল থেকে সকাল ৮টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এর অনেক আগেই লঞ্চটি লোড হয়ে যাওয়ায় সকাল সাড়ে ৭টার পর থেকেই টার্মিনালের মাইক থেকে পারাবত-৮ লঞ্চটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।


 
কিন্তু এ নিদের্শনায় কর্নপাত না করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তখনো যাত্রী উঠিয়ে যাচ্ছিলেন। এরপর বিআইডব্লিউটিএ’র টহলদল এসে তাদের টার্মিনাল ছাড়ার নির্দেশ দিলে লঞ্চের ভেতর থেকে ম্যানেজার বের হয়ে আসেন। এসময় ম্যানেজার ওই কর্মকর্তাকে আরো কিছক্ষণ অবস্থানের অনুরোধ করেন। এরপর টহলদল নিয়ে সেখান থেকে চলে যান ওই কর্মকর্তা।
 
এরপর ম্যানেজারের উপস্থিতিতে আবারো যাত্রী উঠানো শুরু করেন লঞ্চ কর্মচারীরা। লঞ্চের ভেতরে দাঁড়ানোর মতো জায়গা না থাকায় অনেক যাত্রীকে বের হয়ে আসতে দেখা যায়। তবে বের হয়ে আসা ওই সব যাত্রীদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই জোর করে আবারো লঞ্চের ভেতরে ঢোকাতে দেখা গেছে।
সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড়/ছবি: সুমনপরে সকাল ৮টার দিকে আবারো ফিরে আসেন বিআইডব্লিউটিএ’র টহলদল। এসময় টহল দলের নেতৃত্ব দেয়া কর্মকর্তা লঞ্চের ম্যানেজারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ভাই এইবার ছাড়েন। আর কতো? আসে পাশে মিডিয়ার লোক আছে ঝামেলা হয়ে যাবে।
 
লঞ্চের ম্যানেজারের উত্তর, ভাই আমার কেবিনের যাত্রীদের সময় দেয়া আছে সাড়ে ৮টায়। সাড়ে ৮টার পর আর এক মিনিটও দাঁড়াবো না।
 
এসময় সাংবাদিক পরিচয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র ওই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি না হয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান।
 
লঞ্চ ম্যানেজার সুমন খান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কেবিনের যাত্রীদের সময় দেয়া আছে সাড়ে ৮টায়। তারা এখনো এসে পৌঁছতে পারেনি। তাই দেরি করছি।
 
লঞ্চ থেকে তো যাত্রীরা দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে বের হয়ে আসছে, এখনো যাত্রী উঠাচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লঞ্চের ভেতরে জায়গা এখনো ফাঁকা। সবাই চায় একটু আরামে যেতে। কিন্তু ঈদের সময় এটা সম্ভব নয়।
 
লঞ্চের ভেতর থেকে বের হয়ে আসা যাত্রী আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি লঞ্চের ভেতরে ছিলাম। কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নাই। তাই বের হয়ে এসেছি।
 
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক আবু জাফর হাওলাদার বলেন, আমারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। এই চারদিন আমাদের খাওয়া ঘুম নাই। এরপরেও যারা নির্দেশনা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এসআইজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।