ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মধ্যরাতেই জনস্রোত বরিশাল নদী বন্দরে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৭ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
মধ্যরাতেই জনস্রোত বরিশাল নদী বন্দরে ঢাকা থেকে বরিশালে আসছে ঘরমুখো মানুষ।

বরিশাল: আপনজনদের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন জনগণ। কেউ বাসে, কেউ ট্রেনে, কেউ বা আবার লঞ্চে যাচ্ছেন আপন গন্তব্যে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দিনগত রাতেই ঢাকা থেকে বরিশালে আসতে শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ।

ফলে নদীমাতৃক বরিশালের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম নৌযানগুলোতে (লঞ্চ, রকেট) বাড়ছে যাত্রীদের ভিড়।

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ ভিড় মাত্র একদিনের ব্যবধানে বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। শুক্রবার দিনগত রাত ২টার দিকে বরিশাল নদী বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, এই ভিড় জনস্রোতে পরিণত হয়েছে। শুধু নদীবন্দর নয়, আশপাশের এলাকাসহ পুরো নগরজুড়েই চলে রাতভর মানুষের পদচারণা।

সেই রাত ২টা থেকে সুরভী, সুন্দরবন, পারাবত, টিপু, কীর্তনখোলাসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির ১৩টি লঞ্চ ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করে। পাশাপাশি ভায়া রুটের চারটি লঞ্চ ও বিআইডব্লিউটিসি’র একটি রকেট ও একটি যাত্রীবাহী জাহাজ এ বন্দরে থামে। প্রতিটি লঞ্চেই ছিল উপচে পড়া ভিড়।

নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌ-পুলিশ, থানা পুলিশ, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই লঞ্চগুলো মধ্যরাতে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বন্দর এলাকা ত্যাগ করে। কারণ এই লঞ্চগুলোকেই ঈদ স্পেশাল সার্ভিস হিসেবে ঘরমুখো বাকি মানুষগুলোকে নিয়ে আবারো ঢাকা থেকে বরিশালে আসতে হবে।

বরিশাল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে আসা সরাসরি রুটের ১৩টি লঞ্চের মধ্যে মাত্র একটি লঞ্চ বরিশালে থেকে যাবে। কারণ এ সময় বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার যাত্রী হয় না বললেই চলে। বাকি লঞ্চগুলো যাত্রী নামিয়ে দিয়েই  ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে গেছে।  

তিনি জানান, শুক্রবার দিনগত রাত ২টা থেকেই লঞ্চগুলো একে একে আসতে শুরু করে। তখন থেকেই বরিশাল নদী বন্দর এলাকা ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।  

যাত্রীরা বরিশালে পৌঁছে বিভিন্ন গণপরিবহনে করে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গেছে। অনেকে গন্তব্যে যেতে সকালের আলো ফোটার অপেক্ষায় ছিলেন।

তিনি আরো জানান, পুলিশের সব ইউনিট, ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-বন্দরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ের কারণে যাত্রীরা বিগত সময়ের চেয়ে অনেকটা নিরাপদেই আছেন।

শনিবার (২৪ জুন) ভোরে নদী বন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মধ্যরাতে নামা যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ গণপরিবহন কিংবা অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চে করে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আবার কেউ নদী বন্দর এলাকার বেঞ্চি, সিঁড়ি ও ফ্লোরে বসে সকালের অপেক্ষা করছেন। তবে বন্দর এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ। ফলে যাত্রীদের কিছুটা পথ হাঁটতে হলেও যানজট ছাড়াই যেতে পারছেন তারা।

টিপু-৪ লঞ্চের যাত্রী ইলিয়াস বলেন, বাচ্চার স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায়, স্ত্রী-সন্তানকে আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ আমি কোনো মতে দাঁড়িয়ে-বসে লঞ্চে করে বরিশাল এসেছি।  

লঞ্চের অপর এক যাত্রী আয়েশা বেগম বলেন, দুই মেয়েকে নিয়ে আমি আর আমার স্বামী বরিশালে শ্বশুর বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে এসেছি। লঞ্চে মানুষের ভিড়ে কিছুটা কষ্ট হলেও সময় মতো বরিশালে পৌঁছাতে পেরে ভালো লাগছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৯ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এমএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।