ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৫ ঘণ্টায় পাড়ি সাড়ে ৫ কিলোমিটার!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
৫ ঘণ্টায় পাড়ি সাড়ে ৫ কিলোমিটার! বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে তীব্র যানজট

সিরাজগঞ্জ: সকাল ১০টায় ঢাকার কল্যাণপুর থেকে বাসে উঠেছি। দুপুর আড়াইটার দিকে পার হয়েছি বঙ্গবন্ধু সেতু। আর সেতু থেকে কড্ডার মোড় পৌঁছেছি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। প্রচণ্ড গরমে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই যেতে হচ্ছে গ্রামের বাড়ি।

শুক্রবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ কড্ডার মোড়ে দাঁড়িয়ে একথা বলছিলেন সেনাসদস্য মাসুদ হাসান। ঈদের ছুটিতে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে গ্রামের বাড়ি পাবনা যাচ্ছেন তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে কড্ডার মোড়ের দূরত্ব মাত্র সাড়ে ৫ কিলোমিটার। রোজার দিনে এটুকু পথ এগোতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা।  

এর আগে কল্যাণপুর থেকে সেতু পর্যন্ত আসতে সময় লাগে চার ঘণ্টা। ঢাকা থেকে কড্ডার মোড় পর্যন্ত দূরত্ব ১৪৬ কিলোমিটার। ১৪০ কিলোমিটার আসতে যে সময় লেগেছে তারচেয়ে বেশি সময় লেগেছে সেতু থেকে সামনের দিকে পাঁচ কিলোমিটার এগোতে।

একই কথা জানান, টিআর পরিবহনের যাত্রী নওগাঁর জেলার বাসিন্দা ফরিদুল, শাহজাদপুর ট্রাভেলসের যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফরিদ উদ্দিন, মিরাজ ও গার্মেন্টসকর্মী জাহাঙ্গীর আলম।

বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে হেঁটে আসা সিরাজগঞ্জের গার্মেন্টসকর্মী গোলাম আম্বিয়া ও ফরিদ হাসান জানান, সেতু পার হয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলো তাদের বাস। এ কারণে বাস থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যস্থল কড্ডার মোড়ে এসেছেন।

এ সময় আরও কথা হয় হানিফ পরিবহনের যাত্রী আলাউদ্দিন, এসআর পরিবহনের যাত্রী সোহেল, ন্যাশনাল পরিবহনের যাত্রী আরিফুল, পাবনা এক্সপ্রেসের যাত্রী হাফিজুরসহ অনেকের সঙ্গে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশে দীর্ঘ যানজটতারা জানান, ঢাকা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত লাগে আরও ২ ঘণ্টা। আর সেতু পার হয়ে কড্ডা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পাড়ি দিতেই লাগলো ৫ ঘণ্টার বেশি। সারা রাস্তাতেই দুর্ভোগের অন্ত নেই। প্রচণ্ড গরমে রোজা থেকে অনেক কষ্টে গ্রামে ফিরতে হচ্ছে তাদের।

হানিফ পরিবহনের চালক সোহেল রানা, নাবিল পরিবহনের চালক হাসান ইমাম, বিআরটিসির জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর পর দুই পারে ব্যাপক যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৫ গুন বেশি সময় লাগবে।

চালকদের দাবি, মিনি ট্রাক ও পিকআপসহ কিছু কিছু পরিবহন একটু ফাঁক পেলেই যে কোনো দিক দিয়েই গাড়ি ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এসব পরিবহন ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে যত্রতত্র পার্কিং করে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে। এসব কারণেই যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
পুলিশ এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে থেমে থেমে চলছে গাড়ি। বিকেল থেকে শুরু হয়েছে তীব্র যানজট। সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ যানজট রয়েছে বলে জানা যায়।

বঙ্গবন্ধু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ক্রমাগত চাপের কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বাংলানিউজকে বলেন, ইফতারের আগ পর্যন্ত যানজট ছিলো। ইফতারের পর থেকে কিছুটা যানজট কমেছে। তবে অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে থেমে থেমে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।