ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রমজানের শেষের দিকে কুমিল্লার ঈদ মার্কেটে জনস্রোত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
রমজানের শেষের দিকে কুমিল্লার ঈদ মার্কেটে জনস্রোত রমজানের শেষের দিকে কুমিল্লার ঈদ মার্কেটে জনস্রোত-ছবি: বাংলানিউজ

কুমিল্লা: ঈদ মুসলিম বিশ্বের জন্য সবার জন্য বিশেষ আনন্দের। দু’দিন পরেই ঈদ। সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায়।

কুমিল্লার ঈদ মার্কেটের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে নিম্নের এ প্রতিবেদন। নগরীর বিভিন্ন মাকের্টে তরুণীদের নজর কেড়েছে বলিউড ক্যাটালগের থ্রি-পিস বাহুবলী, বাজিরাও মাস্তানি থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা।

ব্যবসায়ীরা জানায়, মেয়েদের বলিউডের ক্যাটালগ বাহুবলী আড়াই হাজার থেকে শুরু করে ১১ হাজার টাকা, বাজিরাও মাস্তানির দিপীকার পোশাক পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার টাকা, ইন্ডিয়ান লং স্যুট থ্রি-পিস চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা ও ইন্ডিয়ান লং কুইন থ্রি-পিস ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজানের শেষের দিকে কুমিল্লার ঈদ মার্কেটে জনস্রোত-ছবি: বাংলানিউজএদিকে বলিউডের ব্লকবাস্টার বাহুবলী ছবির কাটাপ্পা, শাহরুখের রইস আর সালমানের সুলতান ছবির শার্ট, পাঞ্জাবি এবার ছেলেদের নজর কেড়েছে।

এছাড়া চায়না বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শার্ট-প্যান্ট-গেঞ্জির পাশাপাশি রয়েছে দেশি ব্র্যান্ডের শার্ট-প্যান্ট আর গেঞ্জি। এদের দামও অনেক। নগরের বিভিন্ন মার্কেটে কাটাপ্পা পাঞ্জাবি দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা, রইসের পাঞ্জাবি দুই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, সুলতান শার্ট ১৫’শ থেকে ২৮’শ টাকা ও পাঞ্জাবি দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শার্ট ১২শ’ টাকা থেকে শুরু করে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইতালিয়ান, চায়না প্যান্ট ১৫শ’ থেকে শুরু করে প্রায় চার হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মার্কেটগুলোতে পুরুষদের পাঞ্জাবি সর্বনিম্ন সাতশ’ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

শহরের প্রায় শ খানেক দোকানে ভারতীয়, পাকিস্তানি এবং দেশি খাদি, নরসিংদির কাপড়সহ অনেক ডিজাইনের দেশি পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। খাদি দোকানগুলোতে  মসৃন পাঞ্জাবির কাপড় আটশ’ থেকে দুই হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরণের খাদির ফতুয়া ছয়শ’ থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজানের শেষের দিকে কুমিল্লার ঈদ মার্কেটে জনস্রোত-ছবি: বাংলানিউজকুমিল্লার শপিং সেন্টারগুলোতে উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্তদের ভিড় যেমন লক্ষ্যণীয়, তেমনি কুমিল্লা নগরীর টাউনহল হকার মার্কেট, বাহার মার্কেট, রাজগঞ্জের ফুটপাথের দোকানগুলোতে নিম্নবিত্তদের কেনাকাটার ধুম পড়েছে। মার্কেটের তুলনায় এসব দোকানে পোশাকের দাম অনেক কম হওয়ায় এসব দোকানে নিম্নবিত্তদের ভিড় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লেগেই থাকে। রমজানের শেষের দিকে কুমিল্লায় জমে উঠেছে আ‍তর, তসবিহ, টুপি ও জায়নামাজের

দোকান। আর কয়েকদিন পরেই ঈদ। তাই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাযের প্রস্তুতি হিসেবে নামাযের উপকরণসামগ্রীর দোকানগুলোতে ভিড় করতে শুরু করেছে। কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ মোগলটুলী রোড,টাউনহল মার্কেট,বাহার মার্কেট, শাসনগাছা, চকবাজার, আলিয়া মাদ্রাসা রোডে অবস্থিত স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় অর্ধশত আতর, তসবিহ, টুপি ও জায়নামাজের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।

ঈদকে সামনে রেখে মহানগরের প্রায় শতাধিক দর্জি দোকানগুলো এখন খুবই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। এই শতাধিক দোকানে কাজ করছে প্রায় তিন শতাধিক দর্জি। তবে এবার ঈদে দর্জি দোকানে উচ্চবিত্তদের চেয়ে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে।

কারণ মার্কেটগুলোতে দামের কারণে পচ্ছন্দমতো কিছুই কেনা যাচ্ছেনা। টেইলার্সের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের প্রচন্ড চাপ রয়েছে। মহানগরের ক্ষুদ্র দর্জি থেকে শুরু করে বড় বড় টেইলার্সগুলোতে দুই থেকে ২০/২৫ জন কারিগর-কর্মচারী রাতদিন ২৪ ঘণ্টা নাওয়া খাওয়া ভুলে মেশিনের চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছেন, উদ্দেশ্য আসছে ঈদে বড় ধরণের উপার্জন।

এদিকে বিভিন্ন কোম্পানি, মার্কেট ও গ্রাহকদের জন্য জুতা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কুমিল্লার প্রায় দুই শতাধিক পাদুকা তৈরির কারিগর। মহানগরের মুরাদপুর ও বজ্রপুরে রয়েছে চারটি জুতা কারখানা যেখানে প্রায় ৮০জন পাদুকা তৈরির কারিগর দিনরাত অনবরত জুতা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। সামনে ঈদ, তাই যেকোনো সময়ের তুলনায় তাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে গেছে।

এরপর মৌলভাপাড়ার এক জুতা কারখানায় গিয়ে সুমন নামে এক পাদুকা তৈরির কারিগরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের জুতাও কুমিল্লার বিভিন্ন মার্কেটে যাচ্ছে।

স্থানীয় এলাকার অনেকে আবার পরিচিত জনরাও পছন্দ করে জুতা কিনে নিতে পারে এখান থেকে। সচেতন মানুষরা মনে করেন, এবারের মার্কেট ধনীদের দখলে। মধ্যবিত্তদের উপস্থিতি মোটামুটি।

আবার অনেকে শত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আশ-পাশের মানুষের দেখাদেখি অনেক চড়ামূল্যে সন্তানদের জন্য পোশাক কিনছে। এবারের মার্কেট মধ্যবিত্ত তথা নিম্নবিত্তদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন হয়ে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
এএটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।