বলছি বগুড়া শহরের রেলওয়ে আদর্শ হকার্স মার্কেটের কথা। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের মার্কেট বলেই সর্বাধিক পরিচিত।
ঈদ আসন্ন। হাতে মাত্র কয়েকটি দিন। এরমধ্যে কেনাকাটার পর্বটা সারতে হবে। তাই সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কেনাকাটা সারতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ওই মার্কেটে ছুটছেন উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষজনও। শেষ মুহূর্তে বিকিকিনি জমে উঠেছে স্বল্প দামের এ মার্কেটে। যেন পা ফেলার জায়গা নেই সেখানে।
রেলওয়ে আদর্শ হকার্স মার্কেট ঘুরে বেচাবিক্রির এমন দৃশ্যই দেখা গেলো।
চলছে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি। মাঝে মধ্যেই আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে পড়ছে। কখনো কখনো বেশি মাত্রায় বৃষ্টির পানি পড়ছে। আবার ভ্যাপসা গরমে ঘামে ভিজে যাচ্ছে শরীর। কিন্তু মার্কেটমুখি মানুষের স্রোত যেন থেমে নেই। দোকানিরাও বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। মার্কেটে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই রেললাইনের পাশ দিয়ে দোকান বসিয়েছেন। সবমিলে ধুমছে চলে ঈদের বেচাবিক্রি।
মমতাজ হোসেন স্ব-স্ত্রীক ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিলেন স্বল্প দামের এ মার্কেটে। কেনাকাটার ফাঁকে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সব বয়সী মানুষের প্রায় বিভিন্ন ধরনের পোশাক এখানে পাওয়া যায়। পাওয়া যায় ভালোভালো গার্মেন্টের পোশাক। থান কাপড়ও কম যায় না।
আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সামান্য বেতনে চাকরি করি। তাই প্রত্যেক ঈদে এ মার্কেট থেকে নিজের ও পরিবারের জন্য কেনাকাটা করে থাকি।
আবু হেনা, মোস্তফা কামাল, আলতাফ হোসেন, শফিকুল ইসলামসহ একাধিক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, প্রায় সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যায় এখানে। থান কাপড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, জুতো, স্যান্ডেল, বেল্ট, কসমেটিকস সামগ্রী বিক্রি করা হয়। এছাড়া এক্সপোর্ট কোয়ালিটি সম্পন্ন গার্মেন্টের তৈরি ভালোভালো পোশাক বিকিকিনি হয় এখানে।
এসব দোকানিরা জানান, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ অর্থাৎ এটি গরিবের মার্কেট হিসেবে পরিচিত। এখানকার সব ধরনের পণ্য অনেক কম দামে বেচাবিক্রি হয়।
তবে তারা জানান, প্রত্যেক ঈদে গরিবের এ মার্কেটে ধনীদের ব্যাপক চাপ পড়ে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করতে মার্কেট চষে বেড়ান ধনী পরিবারের লোকজন। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ধনীদের পদচারণায় মুখরিত গরিবের মার্কেট যোগ করেন এসব দোকানিরা।
শবনম মুস্তারী, দিলরুবা, সুমাইয়া, সুলতানা, উম্মে সালমা, বিউটি খাতুনসহ একাধিক কলেজছাত্রী বাংলানিউজকে জানান, এখানে সীমিত বাজেটের মধ্যে ভালো ভালো পছন্দের পোশাক পাওয়া যায়। মাত্র ৫শ’ থেকে ৭শ’ খরচ করলেই পছন্দের থ্রি-পিস পাওয়া সম্ভব হয়।
নিজের কেনাকাটা শেষে অনেক সময় একই বাজেটে ছোট ভাই-বোনদের জন্যও প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করা হয়- যোগ করেন এসব কলেজছাত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
এমবিএইচ/এসএইচ