ঈদ যাত্রার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ভোররাতে এমনটাই দেখা গেছে বরিশাল নদী বন্দর এলাকায়।
দিনের বেলা বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে আমতলার মোড় যেতে রিকশায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা লাগলেও ভোররাতে সে ভাড়া হয়ে যায় ৫০ টাকা, ব্যাটারি চালিত কিংবা সিএনজি চালিত অটোরিশায় ১শ’ টাকা, যা দিনের বেলা ৩০ থেকে ৫০ টাকার বেশি নয়।
একইভাবে লঞ্চঘাট থেকে বিএম কলেজের সামনে যদি দিনের বেলায় রিশায় যাওয়া যায় ৪০ টাকায়, আর তা ভোররাতে হয়ে যায় ৭০-৮০ টাকা। পাশাপাশি ব্যাটারি চালিত কিংবা সিএনজি চালিত অটোরিশায় ভাড়া হয়ে যায় ১শ’ টাকা, যা দিনের ৫০-৬০ টাকা।
আবার বরিশাল থেকে গড়িয়ারপারে যেতে হলে মাহিন্দ্রা আলফায় (থ্রি হুইলার) জনপ্রতি ২০ টাকার বেশি খরচ হয় না। সেখানে জনপ্রতি ব্যবস্থা তো নাই-ই, রয়েছে রিজার্ভ তাও আবার ৩শ’ টাকার কম নয়। যেখানে ওই বাহনের ৮ সিটে ৮ জনকে যেতে ভাড়া লাগে ১৬০ টাকা।
এভাবে প্রতিটি যানবানের চালকরাই প্রতিটি মানুষের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে অধিক ভাড়া হাকিয়ে নিচ্ছেন।
তবে ভাড়া নিয়ে ঘরমুখো যাত্রীদের দর-কষাকষি করতে দেখা গেলেও অবশেষে বাড়তি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে গন্তব্যস্থানে।
সুরভী ৯ লঞ্চের যাত্রী ঢাকা থেকে বরিশালে আসা ফিরোজ নামে এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, স্বজনদের নিয়ে ঈদ করতে বরিশালে এসেছেন। ভোররাতেই অনেকটা বাধ্য হয়ে লঞ্চ থেকে নেমেছেন। বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় যাবেন তিনি, একটা অটোরিশা প্রয়োজন। ভাড়া করতে গিয়ে দেখা যায় দেড়’শ টাকার নিচে কেউ যেতে চাইছে না। তারপরও দর কষে ১২০ টাকায় একটি অটোরিশা পেয়েছেন। তবে দিনের বেলায় ৬০ টাকার মধ্যেই যেতে পারতেন।
অপর এক লঞ্চের যাত্রী সাইফুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ঘরমুখো মানুষ নিজ শহরে এসে বাড়তি ভাড়ার বিড়ম্বনায় পড়ছেন। নেই কারোও নজরদারি। যানবাহন চালকরা যা ইচ্ছে তাই ভাড়া চাইছেন। কখনো দ্বিগুণ আবার কখনো তার চেয়েও বেশি ভাড়া চাইছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অটোরিকশা চালক আ. সালাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভোররাতে সেহেরি খেয়েই লঞ্চের যাত্রী ধরতে ঘাটে এসেছেন। লঞ্চগুলো ঘাটে ভেড়ারা পর যে কয়টা খেপ ধরা যায়। একটি খেপও হতে পারে, আবার ৪-৫টা খেপও হতে পারে। রাতে না ঘুমিয়ে ভোররাতে এই কষ্ট করেন একটু বাড়তি আয়ের জন্য’।
পাশে থাকা রিকশা চালক সিরাজ জানালেন, ‘সচরাচর ভোররাতে যানবাহন একটু কমই থাকে। আর এ সময় সবাই চান একটু দূরের খেপ ধরতে, যাতে একটি খেপে বেশি ভাড়া পাওয়া যায়। তবে ঈদ বলেই এখন ভাড়াও একটু বেশি। রিকশা-অটোরিকশা চালকদের কেউ তো আর বকশিস দেয় না’।
এদিকে লঞ্চঘাট এলাকা থেকে জেলার বিভিন্ন রুটের বাস রয়েছে, রয়েছে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস সার্ভিসও।
তবে এ সব পরিবহন যানজট এড়াতে টার্মিনাল এলাকা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে রাখা হয়েছে। লঞ্চ থেকে নেমে এ পথ যাত্রীদের হেঁটেই যেতে হচ্ছে।
তবে কোনো রুটের যানবাহন কোনো পাশে রয়েছে সে বিষয়ে নৌ-পুলিশের গাড়ি দিয়ে বন্দরের সামনে মাইকিং করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
এমএস/জিপি