ঈদকে সামনে রেখে বাড়ি ফেরার প্রতিযোগিতায় ঢাকা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের যাত্রীরা জীবন বাজি রেখে লঞ্চে উঠছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বার বার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করার নির্দেশ থাকলেও তা মানছেন না যাত্রীরা।
দুর্ঘটনার আশঙ্কা জেনেও অনেকটা বাধ্য হয়ে জীবন বাজি রেখে লঞ্চে ওঠার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছেন ঘরমুখো যাত্রীরা। কোনো ভাবেই যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না নৌ-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা।
শুক্রবার (২৩ জুন) ভোর সাড়ে ৬টা থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। এদিন সকালে বরিশালগামী দীপরাজ নামের একটি লঞ্চ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেলেও যাত্রী ওঠা থামছে না।
এসময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে লঞ্চের ছাদে উঠতে দেখা গেছে যাত্রীদেরকে। এদিকে কর্তৃপক্ষও লঞ্চ না ছাড়ায় এক পর্যায়ে কাঁছি (মোটা দড়ি) কেটে দিয়ে লঞ্চ ছাড়তে বাধ্য করে পুলিশ।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে লঞ্চের ছাদে উঠে বাড়ি ফিরছেন জানাতে চাইলে বারেক (৪৫) নামের এক গার্মেন্টস কর্মী বলেন,‘এখন আর ঝুঁকি দেখে লাভ নেই। আগে ছুটি হলে এতো কষ্ট হতো না। বাড়িতে মা-বাবা, স্ত্রী সন্তান রয়েছে। তাদের ছেড়ে তো আর ঈদ করা যায় না। তাই যেভাবেই হোক বাড়ি ফিরতে হবে।
এসময় কথা হয় বাচ্চু (৩৫) নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা এই ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলন, ‘স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকি। বাড়িতে মা-বাবা আছেন। সারা বছর বাড়ি না গিয়ে তাদেরকে বলেছি ঈদের সময় আসবো। এখন যত কষ্টই হোক বাড়ি ফিরতে হবে। ’
এদিকে আগে থেকে ব্যবস্থা না নিয়ে টার্মিনালে এভাবে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে মনে করেন মামুন নামে এক ব্যবসায়ী।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই যাত্রী নিদির্ষ্ট করে দিতে পারতো। লঞ্চ মালিকরা শুধু মাত্র কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছে। ওই সময়ে লঞ্চের ধারন ক্ষমতা অনুযায়ী ডেকের টিকিটও বিক্রি করেতে বাধ্য করলে এখন এই অতিরিক্ত যাত্রী উঠাতে পারতো না।
এর আগে ঈদে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। কিন্তু শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত টার্মিনালে ভ্রাম্যমান আদালতের কোনো টিম দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
এসআইজে/বিএস