বুধবার(২১ জুন) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিআইপি আয়োজিত 'পাহাড়ে ভূমিধস ও আমাদের করণীয়' শীর্ষক এক আলোচনা ও মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিআইপি সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালামের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক বায়েস আহমেদ।
এছাড়া ঢাবির একই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আলী আহম্মেদ খান পিএসসি, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েসনের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ পরিবেশবাদী আন্দোলনের(বাপা)সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মতিনসহ বিআইপি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, পরিকল্পনা সংক্রান্ত আইন ও পরিবেশ সংরক্ষণ নীতিমালা না মেনেই আবাসন গড়া হচ্ছে এবং যেনতেন প্রকারে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। এ কারণে সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে। সামগ্রিকভাবে সুষ্ঠু নগর-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রণীত পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ সংকট থেকে মুক্তি পাবার জন্য তেমন কোনো প্রয়াস একদমই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তাছাড়া এক্ষেত্রে সঠিক উদ্যোগ এবং সমন্বয় দুটোরই অভাব রয়েছে।
তাদের ভাষায়, সরকার ‘আদিবাসীদের’এড়িয়ে চলে। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, পাহাড় কাটার সাথে বড় বড় রাজনীতিকরা যুক্ত আছে। তাই ‘আদিবাসীদের’ মূল্য দেয়া হয় না। সরকারের ভুল নীতি বিরাজ করছে পাহাড় নিয়ে বাণিজ্যকে ঘিরে। এ কারণে আমরা এরই মধ্যে চকরিয়া বন হারিয়েছি। এখন পাহাড় হারাচ্ছি। একদিন এমনকি সুন্দরবনকেও হারাবো।
সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তারা বলেন, অর্থমন্ত্রী আমাদেরকে জানিয়েছেন 'পরিবেশ মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে কোনো অর্থ সহযোগিতা চায় না'। তাই এবারের বাজেটে পরিবেশ খাতে ৭৩০ কোটি টাকা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এই মন্ত্রণালয়টি পঙ্গু আছে ও পঙ্গু থাকতে চায়।
মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হচ্ছে না উল্লেখ করে বক্তারা জানান, পাহাড়ি জনগোষ্ঠি জুম চাষ করলেও নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই পাহাড় ঠিকই রক্ষা করে চলে। কিন্তু প্রভাবশালীদের কাছে প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যের চেয়ে, মানুষের জীবনের মূল্যের চেয়ে এখন অর্থের মূল্য বেশি। এজন্যই পাহাড় নিয়ে করা বাণিজ্যের কারণে এত বেশি সংখ্যায় মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আমরা প্রবল বৃষ্টিপাতের সময় পাহাড় ধসের আশঙ্কার কথা অনেক আগেই সরকারকে জানিয়েছিলাম। সদিচ্ছা থাকলে সরকার পারতো এরকম ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে। কিন্তু সরকার তা করেনি। সরকার আমাদের কথায় কান দেয়নি।
বাংলাদেশ সময়ঃ১৫৫৯ ঘন্টা, জুন ২১, ২০১৭
এমএএম/জেএম